শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইউনাইটেড ইনস্টিটিউটের প্রতারণা

  © সংগৃহীত

বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) কোর্সে ভর্তির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রাজশাহীর ইউনাইটেড টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট। নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করে ভর্তি হয়েও কর্তৃপক্ষের ‘প্রতারণা’র কারণে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না প্রতিষ্ঠানটির ৩০ জন শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে, তারা কিছু জানেন না বলে ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে দেখা করতে না পেরে এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাধ্য হয়ে গত ২ জুলাই ভুক্তভোগীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের দপ্তরে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ইনস্টিটিউট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। ফলে ইনস্টিটিউটে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভর্তি হলেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। তাই তাদের পরীক্ষা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

জানা গেছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে আটজন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (ইইই) সাতজন ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ১০ হাজার, সেমিস্টার ফি বাবদ ২০ হাজার এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ৫ হাজারসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। নিয়মিত ক্লাসও নেওয়া হয়। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক দপ্তরে কোনো টাকা জমা দেওয়া হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় তাদের নামে কোনো প্রবেশপত্রও ইস্যু করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শামিউল ইসলাম বলেন, আমরা ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন এবং পরীক্ষার ফি দিয়েছি। নিয়মিত ক্লাসও করেছি। এখন শুনছি, আমাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো নামও নেই। ফলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগও নেই।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আমরা ইনস্টিটিউটে গিয়ে টাকা ফেরত চেয়েছি। কর্তৃপক্ষ ভর্তির সময়ে নেওয়া আমাদের এইচএসসির সার্টিফিকেট ও মার্কসশিট ফেরত দিলেও কোনো টাকা ফেরত দেয়নি। ইনস্টিটিউটের এমডি দেশেও নেই বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে গত ১০ জুলাই পবা উপজেলা পরিষদের দক্ষিণে অবস্থিত ওই ইনস্টিটিউটে গিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসানের দেখা মেলেনি। পরে তার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল শনিবার দুপুরে ইনস্টিটিউটের রিসিপশনিস্ট নিপা মোবাইলে জানান, এমডি মেহেদী হাসান দেশে নেই। কবে আসবেন, তা তিনি বলতে পারেন না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের টাকা এমডি ফেরত দিতে চেয়েছেন বলে তিনি জানান।

জানতে চাইলে রাবির কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান বলেন,, ওই ইনস্টিটিউট গত তিন বছর বিএসসি শাখার কোনো নবায়ন ফি জমা দেয়নি। তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ফলে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা ওই ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। তাদের অনুমোদন বাতিল করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ