ডিসেম্বরেই বার্ষিক পরীক্ষা, তিন উপায়ে শেষ হবে সিলেবাস

  © ফাইল ফটো

চলতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। সেজন্য তিন ধরনের বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অন্তত ৭০ কার্যদিবসে পাঠদান করা সম্ভব বলে মত তাদের। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্য ৫০ ও ৩০ দিন কার্যদিবস ধরে তিন ধরনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি  হচ্ছে।

জানা গেছে, শিক্ষার এই ‘রিকভারি প্ল্যান’ চূড়ান্ত করতে বুধবার (১২ আগস্ট) এনসিটিবিতে কর্মশালা শুরু হয়েছে। এতে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) এ কর্মশালা শেষ হবে। জানা গেছে, ৭০ দিন , ৫০ দিন কিংবা ৩০ দিন সময় পেলে কোন বিষয়গুলো পড়াতে হবে, তা নিয়েই তিন পরিকল্পনা। শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা পাঠ্যবই বিশ্নেষণ করে এ প্রস্তাব তৈরি করছেন। এটি চূড়ান্ত হলে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলা সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। বর্তমান সিলেবাসের যে অংশ গুরুত্বপূর্ণ তা রেখে বাকিগুলো বাদ দেওয়া হবে। আর ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অটো পাসের মাধ্যমে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে।

অন্যদিকে, প্রাথমিকের রিকভারি প্ল্যান তৈরি করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)। আর মাধ্যমিকের রিকভারি প্ল্যান তৈরি করছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু)। সেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে এনসিটিবিতে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা  বলেন, কারিকুলাম ও সিলেবাসের নানা সংক্ষিপ্তরূপ করা হচ্ছে। পুরো বছরের পাঠ পরিকল্পনা রি-ডিজাইন করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে কবে নাগাদ, তার ওপর নির্ভর করে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা কেবল পরিকল্পনা সাজিয়ে দেবেন। স্কুল খোলার পর কী পড়ানো হবে, তা নিয়েই এ পরিকল্পনা। তারা চাইছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষাবর্ষ শেষ করতে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করার কারণে গুরুত্বপূর্ণ যেসব অংশ পড়ানো সম্ভব হবে না, তা পরবর্তী শ্রেণিতে অত্যাবশ্যকীয় পাঠ হিসেবে পড়ানো হবে। এতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার ঘাটতি হবে না।

গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, একাধিক বিকল্প নিয়ে ভাবা হচ্ছে। তাই কিছুই এখনও চূড়ান্ত নয়।

সুপারিশগুলোকে শেষ মুহূর্তে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। বেডু মনে করছে, সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে ১০০ নম্বরের পরীক্ষাই নেওয়া সম্ভব। আর অক্টোবর বা নভেম্বরে খুললে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হতে পারে। সেটি সম্ভব না হলে অটো পাসের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে শিক্ষার্থীদের।