বসে থাকার দিন শেষ, বই কিনে বাড়িতে পড়তে হবে একাদশের শিক্ষার্থীদের

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চলতি বছরের একাদশ শ্রেণির প্রায় ১৬ লাখ শিক্ষার্থীর ভর্তি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দিনক্ষণও ঠিক করা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীরা যেন ঘরে হাত গুটিয়ে বসে না থাকে, সে জন্য বাজারে উচ্চ মাধ্যমিকের বই ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সে মোতাবেক সব ব্যবস্থা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

তবে ভর্তি শুরু কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তিন সপ্তাহ আগে ভর্তি কার্যক্রম অনলাইনে শুরু করে দেওয়া হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হবে, তা বলা সম্ভব নয়।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ত্বরিত সিদ্ধান্তে নতুই বই আনার কাজটি সম্ভব হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের তিনটি বই বাংলা, ইংরেজি ও বাংলা সহপাঠ ঢাকাসহ সারাদেশে পাওয়া যাবে শিগগিরই। এ তিনটি বই সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ হয়ে থাকে। অথচ অতীতে কখনো ভর্তির আগে একাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক ‘প্রস্তত’ ছিল না। এখন বাজারে নতুন বই আসায় শিক্ষার্থীদের অলস বসে থাকার সময় শেষ হচ্ছে। বই কিনে বাড়িতেই পড়াশোনা করতে হবে তাদের।

এছাড়া এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিকের আইসিটি বিষয়ের বইটি নিম্নমানের হওয়ায় তা বেসরকারি খাত থেকে তুলে নেওয়া হবে। বাংলা, ইংরেজি ও বাংলার মতো আইসিটি বইটিও সরকারিভাবে বাজারে আসবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই বইটি বাজারে পাওয়া যাবে। বর্তমানে নতুন করে লেখা হচ্ছে বইটি।

জানা গেছে, গত ২ জুলাই এনসিটিবির বোর্ডসভায় উচ্চ মাধ্যমিকের বই বাজারজাতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘গত মার্চ থেকে দেশের সব কলেজ বন্ধ আছে। ফলে শিক্ষার্থীরা বই কিনতে পারেনি। এ কারণে একাদশ শ্রেণির বই ছাপানো প্রতিষ্ঠান অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ চার মাস বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গেছে, সাধারণত কলেজেগুলোয় ক্লাস শুরুর পর বই আসত। এবার ভর্তির আগেই বই বাজারে থাকছে। এ সিদ্ধান্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের প্রশংসা পেয়েছে। তারা বলছেন, করোনার কারণে ভর্তি ও ক্লাস শুরু না হলেও বই কিনে এনে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মধ্যে রাখা সম্ভব হবে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘অক্টোবর পর্যন্ত আগে মুদ্রিত ও বাজারজাতকৃত তিনটি বই ক্রয়, বিক্রয়, সংগ্রহ এবং পাঠদানে ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে পৌঁছানোর কাজে বাধা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, অসদুপায় গ্রহণ বা তথ্য বিকৃতিসহ নকল পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় কিংবা সংরক্ষণ করলে সেটি হবে দণ্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া তা সরকারি কাজে বাধা হিসেবে গণ্য হবে।’

জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিকের কোনো বইয়ে কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন আসছে না। একাদশে ভর্তি শুরু করতে না পারায় বিভিন্ন মহল থেকে বই বাজারে সরবরাহ রাখার তাগিদ আসছিল। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে পাঠ্য বইয়ের কারিকুলাম আধুনিকায়ন বেশিদূর আগানো যায়নি। ফলে নতুন কারিকুলাম একবছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগের কারিকুলাম ও বই-ই নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য রাখা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ