১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৪:০৭

নিষিদ্ধই থাকছে বিদেশী স্টাডি সেন্টার

লোগো

‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা-২০১৪’ এর সংশোধনীর খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের স্টাডি সেন্টার করার বিধান পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস খোলার সুযোগ রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বেশকিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি ইউজিসির সদস্য (তৎকালীন) ও বিধিমালা সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. আখতার হোসেনের সই করা সংশোধিত বিধিমালার খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। খসড়ায় স্টাডি সেন্টার করার বিধান পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই বিধিমালা পাস হলে বাংলাদেশে চালু থাকা সব স্টাডি সেন্টার অবৈধ বলে গণ্য হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সংশোধনী আমাদের কাছে এসেছে। এই বিধিমালার ব্যাপারে আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে তা জারি করা হবে। আমরা দ্রুততম সময়েই কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’

জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩১ মে ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা জারি করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই বিধিমালার আলোকে ১৪টি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আবেদনও করে। এর মধ্য থেকে দুটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি কলেজের স্টাডি সেন্টার পরিদর্শন ও যাচাই শেষে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এডুকো বাংলাদেশ কর্তৃক অস্ট্রেলিয়ার মোনাস কলেজ প্রাইভেট লিমিটেড বিএসি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক ইউনিভার্সিটি অব ডার্বি এবং সেন্টার ফর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি কর্তৃক পরিচালিত লন্ডন স্কুল অব কমার্সের স্টাডি সেন্টার পরিচালনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের আপত্তির কারণে তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঐ কার্যক্রম স্থগিত রাখে। এর মধ্যে বিএসি ইন্টারন্যাশনাল অবৈধভাবে তাদের কার্যক্রম এখনো পরিচালনা করছে। অভিযোগ রয়েছে, দেশে বর্তমানে শতাধিক স্টাডি সেন্টার পরিচালনা করা হচ্ছে। ইউজিসি থেকে বারবার ওই সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা তা মানছে না। সংশোধিত বিধিমালা জারি হওয়ার পর অনুমোদনহীন অবস্থায় চলা ওই সব স্টাডি সেন্টার আইনগতভাবেই নিষিদ্ধ হবে।

সংশোধিত নীতিমালার খসড়া অনুযায়ী, শুধু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন করা যাবে দেশে। তবে এর জন্য রাখা হয়েছে কঠোর শর্ত। ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে ৫০০-এর ওপরে থাকা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা স্থাপন করা যাবে না  বলেও শর্ত দেওয়া হয়েছে। খসড়া বিধিমালা অনুযায়ী, শাখা ক্যাম্পাসকেও সমাবর্তন করতে হবে। তবে সনদপত্রে সই করতে হবে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উপাচার্য বা প্রেসিডেন্টকে। এমনকি সমাবর্তনের সময় তাঁকে উপস্থিত থাকতে হবে। কোনো শাখা ক্যাম্পাস বিধিমালা না মানলে প্রত্যেকবার ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড করা যাবে। এ ছাড়া কোনো শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ হলে বা কোনো কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হলে শাখা ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্টদের ক্ষতিপুরণ দিতে হবে।