সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ালে জরিমানা: তথ্যমন্ত্রী

  © ফাইল ফটো

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ালে সার্ভিস প্রোভাইডার তথা ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে জরিমানার বিধিমালা তৈরি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। উন্নত দেশের আদলে এই বিধান প্রণয়ন করা হবে বলে তিনি জানান।

এ সময় তিনি বলেন, বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো, চরিত্রহনন ও গুজব প্রচার করা এখন বড় সমস্যা। এই সমস্যার মধ্যে বাংলাদেশও আছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে ‘বিশ্ব টেলিভিশন দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও টিভি ক্যামেরাপারসন অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আইনও পাস হলে সম্প্রচারমাধ্যমের সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব হবে। তারপরও সম্প্রচার নীতিমালা যেহেতু বিদ্যমান তাই এই নীতিমালার আলোকে কীভাবে আইনি সুরক্ষা দেওয়া যায় সেটিও আমরা ভাবছি।

হাছান মাহমুদ বলেন, এখন ৩৪টি চ্যানেলে সংবাদ ও অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার হচ্ছে। আরও ১১টি সম্প্রচারে আসার অপেক্ষায় আছে। ১১ বছরে বেসরকারি টিভির সংখ্যা সাড়ে তিন গুণ বেড়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আসলে টেলিভিশন নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কৃষ্টি-সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি দেশ–জাতি গঠনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি টেলিভিশন যেন কারও ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়ী স্বার্থে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘শিশু-কিশোরসহ আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর টেলিভিশনের প্রভাব ব্যাপক। যে মাধ্যমের এত বড় প্রভাব, সেটিকে আমরা জাতিগঠনের বিশাল কাজে লাগাতে পারি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, টিভির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপন ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আগে ৪০০-৫০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যেত, যা বন্ধ করা হয়েছে। সম্প্রচারমাধ্যম পুরোপুরি ডিজিটালাইজড হলে বিদেশেও বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে কর আরোপের জন্য এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এখন টিভির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। আগামী দিনের টিভির চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। বেসরকারি টিভি সরকারি গাইডলাইনে সম্প্রচার হয়। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তাহলে দর্শকের আস্থাহীনতা তৈরি হবে না।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংবাদ পরিবেশন করতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে মেয়র নাছির বলেন, এতে দর্শকের আস্থা বাড়বে। দেশ লাভবান হবে। সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ হলে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মধ্য দিয়ে রুটি-রুজি নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপমহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ কুমার খাস্তগীর প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ