দুর্যোগে সুন্দরবনই বারবার আমাদের রক্ষা করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

  © ফাইল ফটো

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুন্দরবনই বারবার আমাদের রক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

রোববার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এমন মন্তব্য করেন।

ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবনের প্রতি কেউ যেন অযত্ন-অবহেলা করতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে উদ্যোগ নিতে বলবো। সুন্দরবনের যেন আরও যত্ন নেয়া হয়, নতুন নতুন গাছ লাগিয়ে বনকে শক্তিশালী করা হয়।’

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের বাতাসের গতিবেগ ছিল গড়ে ৪০-৯০ কিলোমিটার। আবহাওয়ার উন্নতি হচ্ছে। সোমবার রৌদ্রজ্জ্বল দিন পাবো বলে আশা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভীতি ছিল, তা সাংবাদিকরা দূর করতে পেরেছেন, মানুষকে সচেতন করতে পেরেছেন। তাই আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের তৎপরতার কারণে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।

এনামুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ২১ লাখ ৬ হাজার ৯১৮ জন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। বুলবুল মোকাবিলায় দেশের ১৪টি জেলায় আগেই পাঁচ লাখ করে টাকা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, নেভি ও কোস্টগার্ড ভালো কাজ করেছে। পটুয়াখালীতে হারিয়ে যাওয়া ১০০ জেলেকে উদ্ধার করেছে তারা। আগে থেকেই রাসমেলা বাতিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন, ডিসিদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ কারণে আমরা উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সাহস পেয়েছি।

দুর্যোগ পরবর্তী পুনর্বাসন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরুর আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আগে পরিদর্শন করতে হয়। কাল থেকে আমরা পরিদর্শনে যাবো। জেলা প্রশাসক ও থানা নির্বাহী অফিসাররাও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছেন। এ কাজের জন্য সাত দিন সময় লাগবে।’

সিগন্যাল বেশি দেয়া হয়েছিল কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিগন্যাল সঠিক ছিল। ঝড়টি প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে। এরপর সুন্দরবন হয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। তাই ক্ষয়ক্ষতি তেমন একটা হয়নি। কিন্তু ঝড়টি যদি সরাসরি আমাদের উপকূলে আঘাত হানতো তাহলে এর ভয়াবহতা বোঝা যেত।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আন্দামান সাগর থেকে বুলবুলের উৎপত্তি। এটি খুলনা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়েছিল। রোববার ভোর ৫টার দিকে ঝড়টি খুলনা, বরগুনা ও বাগেরহাটে আঘাত হানে। এরপর ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৯টায় ১০ নম্বর সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত রাখতে বলা হয়েছে।

ত্রাণসচিব শাহ কামাল বলেন, এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে পেরেছি। আগাম সিগন্যাল ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ