নার্সিং কাউন্সিল দফতরে অবরুদ্ধ স্বাস্থ্যসচিব

  © সংগৃহীত

অবিলম্বে লাইসেন্সিং পরীক্ষা নেয়াসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য আন্দোলন করছে বিক্ষুদ্ধ নার্সরা। এ আন্দোলনে গিয়ে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে আন্দোলনকারী নার্সরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব (স্বাস্থ্য শিক্ষা) শেখ ইউসুফ হারুনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) নার্সদের পূর্বঘোষিত অবস্থান ধর্মঘট পালিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল দফতরে এ অবস্থান ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য সচিব ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের একাধিক অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল রেজিস্ট্রার ও একাধিক নার্সিং কলেজের শীর্ষ কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ রয়েছেন।

রাজধানীর বিজয়নগরে নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল ভবনের সামনের রাস্তায় নার্সরা মিছিল-স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে রেখেছেন। নার্সদের একটি দল রেজিস্ট্রারের কক্ষের বাইরে অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি-দাওয়া পূরণে শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি চাইছেন।

বাংলাদেশ ইন্টার্ন নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, লাইসেন্সিং পরীক্ষা বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ ও বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সিং ইউনিয়নের উদ্যোগে অবস্থান এ ধর্মঘট ও অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

আন্দোলনকারী নার্সরা জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রুলস অব বিজনেস অ্যান্ড অনুসরণ না করে এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল আইন ভঙ্গ করে ভিন্ন কোর্স, ভিন্ন নাম, ভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভিন্ন কারিকুলাম, ভিন্ন বিভাগ, অভিন্ন নীতিমালা শর্ত, কারিগরি বোর্ডের পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজিস্টদের ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে নিবন্ধনের দাবির মাধ্যমে সৃষ্ট জটিলতার কারণে আট হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কম্প্রিহেনসিভ বা লাইসেন্স পরীক্ষা গত এক বছর ধরে দিতে পারছেন না। এতে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এই জটিলতা নিরসন করে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ বা লাইসেন্সিং পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে তারা আজকের এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির এক বৈঠকে যোগ দিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব (স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আজ সকাল ১০টায় সেখানে এসেছিলেন। তখন থেকে আন্দোলনকারী নার্সরা তাদের সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্স চালুর ব্যাপারে অনুমতি প্রদানের জন্য উচ্চ আদালতে একটি মামলা চলছে। এ কারণে তাৎক্ষণিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নার্সদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

জানা গেছে, সকাল দশটা থেকে নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে যারা অবরুদ্ধ রয়েছেন তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শিক্ষা) ড. আনোয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম-সচিব (নার্সিং শিক্ষা) সিদ্দিক আক্তার, উপসচিব ইসরাত জামান, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্ম-সচিব শিরিন দেলহুর, পরিচালক (শিক্ষা) জাহেরা বেগম, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল রেজিস্ট্রার সুরাইয়া বেগম, মিটফোর্ড নার্সিংয়ের অধ্যক্ষ নুরজাহান বেগম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ নার্সিংয়ের সুপারিনটেনডেন্ট খাইরুন নাহার প্রমুখ।

সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসমত আরা পারভীন বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে তিনি এসেছেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, নার্সিং অধিদফতর ও কাউন্সিলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ