বাবা-চাচা বড় ভাই-বোনদের সঙ্গে ক্লাসে বসব না

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তিতে বয়স সীমা তুলে দেয়ার প্রতিবাদ

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তিতে বয়স সীমা তুলে দেয়া ও ভর্তির যোগ্যতা শিথিল করার প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। আগমীকাল বুধবার সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করবে শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বাবা-চাচা বড় ভাই-বোনদের সঙ্গে ক্লাসে বসব না।

এর আগে বয়সসীমা তুলে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাাপরিচালক বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছে কারিগরি ছাত্র পরিষদ (বাকাছাপ), আইডিইবি, প্রাইভেট পলিটেকনিক উদ্যোক্তা সমিতি (বিপিপিইএ) সহ বিভিন্ন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে আগামী ৯ আগস্ট থেকে দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা-২০২০ অনুসারে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। যেখানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং বিদেশ ফেরত দক্ষ কর্মীদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে কোন রকমের বয়সের সীমাবদ্ধতা রাখা হবে না। মন্ত্রী বলেন, অনেক ব্যক্তির হয়তো প্রয়োজনীয় কারিগরী দক্ষতা আছে কিন্তু তার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সার্টিফিকেট নাই এবং সার্টিফিকেট না থাকার কারণে ভালো চাকরি পাচ্ছে না; অথবা চাকরি পেলেও ভালো বেতন পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সে ব্যক্তি যদি চায় এবং যদি তার প্রয়োজনীয় একাডেমিক যোগ্যতা থাকে তাহলে সে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে পারবে।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য হটকারী ভর্তি নীতিমালা ২০২০ করা হয়েছে। এটা বাতিল করে ২০১৯ সালের ভর্তি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। টিএমইডি, ডিটিই, বিটিইবিসহ মাঠপর্যায়ের অংশজনদের সমন্বয়ে গঠিত ভর্তি কমিটির সুপারিশ ও নীতিমালা উপেক্ষা করে কোন প্রকার স্টাডি না করেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় একতরফাভাবে হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ।

তারা আরও দাবি করেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তিতে বয়সে বাঁধা তুলে দিলে সরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হবে ও বয়সের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারসাম্য হাড়াবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই হটকারী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত শিক্ষার এই গুরুত্বপূণূ অংঙ্গনকে অশান্ত করে তুলেছে। দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক এবং সর্বস্তরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যা বর্তমান পরিস্থিতি বিঘ্নিত করতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ