সহজ শর্তে ঋণের দাবি কিন্ডারগার্টেন মালিকদের

কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের অনুদান ও মালিকদের সহজ শর্তে ঋণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-মালিকরা। বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এ মানববন্ধন করেন তারা।

এসময় করোনাভাইরাসের এ দুঃসময় উত্তরণে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্যার্থে প্রণোদনার ব্যবস্থা যা বা সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে দেয়া, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-শিক্ষিকা-কর্মচারীদের জন্য রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা, স্কুলগুলোর জন্য অনুদান প্রদান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া, সহজ শর্তে কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহকে নিবন্ধনের আওতায় আনা ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষার মতো নিজ স্কুলের নামে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়াসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি এম এ সিদ্দিক মিয়া, মহাসচিব শেখ মিজানুর রহমান, প্রধান পৃষ্ঠপোষক আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী, উপদেষ্টা জি এইচ ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খান মোজাম্মেল হক মিঠু ও এম এ তুহিন, হাজী আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গভার্নিং বডির সভাপতি মো. আব্দুল রাকিব ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল মালিক পরিষদের সভাপতি মো. মজিবুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা কিন্ডারগার্টেন ও শিক্ষা উন্নয়ন সমিতির মহাসচিব সালেহ আহমেদ, মাস্ট এডুকেশন ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আল আমিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ নিউ চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনে মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পুরো বিশ্বের মতো আমরা ও দিশেহারা। এ জন্য দেশের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার মতো কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়ন প্রতিষ্ঠিত প্রায় ৬৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে দেশে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ১ কোটির অধিক কোমলমতি শিশু কিশোর শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১০ লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা-কর্মচারী কর্মরত আছেন, এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে তাদের পরিবারবর্গ।

বক্তারা বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশন করতে পারছে না। প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত। বাড়ি ভাড়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন, বিদ্যুৎ ও পানি বিল পরিশোধ করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক টিউশন ফি থেকে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অর্থনৈতিকভাবে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। কোনো শিক্ষক না পারে কারো কাছে হাত পাততে, না পারে লাইনে দাঁড়িয়ে সাহায্যে নিতে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনায় কিন্ডারগার্টেনগুলোকে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবি করে আসছে।

বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রণোদনার দাবিতে গত ৩ মে জেলা প্রশাসকদের কাছে আবেদন করা হয়। গত ৬ জুন ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিট (সাগর-রুনী মিলনায়তনে) সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো কখনোই কোনো সরকারি অনুদান পায় না এবং পাওয়ার জন্য আবেদনও করেন নাই। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুলসমূহ বন্ধ থাকাতে শিক্ষক-শিক্ষিকদের অবস্থা শোচনীয় বিধায় প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন সেক্টরে ও প্রতিষ্ঠানে যে আর্থিক প্রণোদনা এবং সহযোগিতায় হাত প্রসারিত করেছেন, তেমনি আজ চরম দুর্দিনে প্রধানমন্ত্রী কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের পাশে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।


সর্বশেষ সংবাদ