ঢাবিতে চান্স না পেয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যার চিঠিটি ভুয়া

ভাইরাল হওয়া ভুয়া সেই চিঠিটি
ভাইরাল হওয়া ভুয়া সেই চিঠিটি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় মৌমিতা মৌ নামে এক ছাত্রী উত্তীর্ণ না হয়ে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন দাবি করার একটি চিঠির ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ফলাফল প্রকাশের পর এটি ছড়িয়ে পড়ে যা পরবর্তীতে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। তবে ভাইরাল হওয়া আত্মহত্যার এই চিঠিটি ভুয়া। মৌমিতা মৌ নামে কোন ছাত্রীই চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেননি। 

ওই চিঠিতে যা লেখা আছে:
ভাইরাল হওয়া ওই চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, এটি লেখা হয়েছে ৭ জুন সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে। এর আগে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ওই চিঠিটি মৌমিতা মৌ তার মা-বাবাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “আমি ঢাবিতে চান্স পেলাম না। আমার জন্য তোমরা অনেক টাকা খরচ করেছো। আমি চান্স না পাওয়াতে তোমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারছোনা। সবাই শুধু আমার সমালোচনা করছে, মেয়েটা সারাদিন পড়েও ঢাবিতে এমনকি কোথাও চান্স পেল না! কিন্তু আমি আমার জীবনের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্ত দুর্ভাগ্যক্রমে চান্স হলো না। আমি এত সমালোচনা, অপমান, টেনশন সহ্য করতে পারছিনা। আমি এখন আত্মহত্যা করবো। এর জন্য কেউই দায়ী নয়। এই চিরকুটটি যখন কেউ পাবেন, তখন আমি ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে থাকবো।”

তবে এ ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবা থেকে এখন পর্যন্ত দেশের কোনো সংবাদমাধ্যমেই এ সংক্রান্ত কোনো খবর প্রকাশ হয়নি। ফেসবুকে অনেকেই দাবি করছেন ঘটনাটি কুড়িগ্রামের। ওইদিন একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে এই ইস্যু নিয়ে লাইভে আসেন গণমাধ্যমটির কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি গোলাম মাওলা সিরাজ।

এসময় লাইভে তিনি জানান, “আজ সকালে এটি আমাদের নজরে আসে। আমি যখন এটা দেখি তখন স্থানীয় যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে বা সদর থানা পুলিশ রয়েছে তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই৷”

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সিরাজ সম্ভাব্য কিছু স্থানে খোঁজ নেন এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের সহকর্মীদের সাথেও এ ব্যাপারে কথা বলেন। কিন্তু সকলেই বলেছে, এমন কোনো খবরের সত্যতা কেউ পায়নি। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজেও এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। সেখান থেকেও এ ধরণের কোনো তথ্য মেলেনি। 

এদিকে, ঘটনার দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা হয় ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি একটি কোচিং সেন্টারের দুইজন শিক্ষকের। তারা জানান, কুড়িগ্রামের ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল কিন্তু আত্মহত্যা করেননি। তাকে বাঁচানো গেছে।

তাদের মধ্যে জাহিদ হাসান নামে একজন জানিয়েছিলেন, ‘তিনি তার এক ছাত্রের মাধ্যমে এই বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন। তবে ওই ছাত্র তাকে আর বেশিকিছু জানাতে পারেননি।’

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের কাছে কোন তথ্য নেই বলে গণমাধ্যমকে জানান ওসি (তদন্ত) এম আর সাঈদ।


সর্বশেষ সংবাদ