১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে এমপিওভুক্তিতে

নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বহুল প্রত্যাশিত দাবি আলোর মুখ দেখছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-ধর্মঘটের পর তাদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। এতোদিন বাজেটে অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে ঝুলে আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া। তবে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি থাকছে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যদিও চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫০০ কোটি টাকা। নানা দিক বিবেচনায় সে টাকা অব্যবহৃতই থেকে যায়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৭৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বিবেচনা করে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অধীন মাদরাসা ৫৫১টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিটি বাজেটে শিক্ষা খাত গুরুত্ব পায়। কিন্তু তারপরও ২০০৯ সালের পর মাত্র একবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। এরপর বহু নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হলেও এমপিওভুক্ত হয়নি একটিও। শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাই থেকে এমপিওভুক্তির আবেদন নেয়া শুরু করে সরকার। অনলাইনে প্রায় সাড়ে নয় হাজার আবেদন জমা পড়ে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ওই সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলে সরকারের বাড়তি খরচ হবে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি। অথচ স্কুল-কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা এমপিওভুক্তি খাতে আছে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা। এত কম টাকায় বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা অসম্ভব। বিষয়টি যাতে অর্থের অভাবে ঝুলে না থাকে সে জন্য আগামী অর্থবছর এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, নতুন অর্থবছরে এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা ও চলতি বছর অব্যহৃত ৫০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। এমপিওভুক্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৩৩২টি স্কুল এবং ২৯৯টি কলেজের একটি তালিকা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে অনেক দিন ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করেছেন। তাদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা অনেক আগেই এমপিওভুক্তির কাজ শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য চার ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে আমরা তা যাচাই-বাছাই করব। তাদের দেয়া তথ্য ঠিক থাকলে আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হবে।

‘যোগ্য একটি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে অপরটিকে দেয়া হলো এ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হবে। এ কারণে সব যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আগামী তিন অর্থবছরে ধাপে ধাপে এমপিওভুক্ত করা হবে। তবে কতসংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হবে সেটা উল্লেখ করেননি তিনি। তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য যাচাই-বাছাই চলছে। যেগুলো যোগ্য বলে বিবেচ্য হবে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে।

পড়ুন: ৯ বছরের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে নন-এমপিও শিক্ষকদের


সর্বশেষ সংবাদ