আম্পান মানে– শক্তিশালী, এসেছে থাই ভাষা থেকে

  © সংগৃহীত

ধেয়ে আসছে সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতের শেষ ভাগ থেকে আগামীকাল বুধবার (২০ মে) বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এটি দেশের ১৪টি জেলায় আঘাত হানতে পারে। আর এসব জেলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ নামটি এখন বাংলাদেশের মানুষের মুখে মুখে। তবে অনেকেই জানেন না এর নামকরণটি কীভাবে হলো। ‘আম্পান’ অর্থ শক্তিমান বা শক্তিশালী। এটি একটি থাই শব্দ। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী রাষ্ট্রগুলো নিয়ে গঠিত ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক (এসক্যাপ) এর ৮ সদস্যের প্যানেল সকলের সম্মতির ভিত্তিতে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করে থাকে। পুরাতন তালিকার সর্বশেষ নাম ছিল ‘আম্পান’। সে মতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের নামকরণ প্রস্তাব করে থাইল্যান্ড।

জানা যায়, ২০০৪ সালে ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিকাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) এবং ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড প্যাসিফিক (এসক্যাপ)- এর অধীনস্থ আটটি দেশ- ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, এবং থাইল্যান্ড সিদ্ধান্ত নেয় যে এই অঞ্চলের সাইক্লোনের নামকরণ করবে তারা। প্রতিটি দেশ তাদের নামের তালিকা পাঠানোর পর তা চূড়ান্ত করে একটি ডব্লিউএমও এবং এসক্যাপ প্যানেল, যার পোশাকি নাম প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস (পিটিসি)। 

২০০৪ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সভায় আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোনের নামকরণ নিয়ে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয় সে সময়ই আম্পান নাম তালিকায় যুক্ত হয়। মূলত ওই সময় থেকেই এ অঞ্চলের ঝড়গুলোর নির্দিষ্ট নাম দেয়া শুরু হয়। তার আগে বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো করে আলাদা নামে ঝড়গুলোকে আখ্যায়িত করতো।

গত মাসে ১৬৯টি নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে আইএমডি। ১৩টি দেশ থেকে ১৩টি করে নাম চূড়ান্ত করা হয়। নতুন তালিকায় দেওয়া হয় পূর্ববর্তী তালিকার একটিমাত্র নাম–আম্পান। কারণ নতুন তালিকা প্রকাশের সময় পর্যন্ত অব্যবহৃত ছিল সেটি।

জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে দেশের আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া চূড়ান্তভাবে শুরু করে। ওই বছরের নভেম্বরে আঘাত হানা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয় ‘সিডর’। সিডরের পর একে একে তাণ্ডব চালানো ঝড়গুলোর নামকরণ করা হয় যথাক্রমে- আইলা, মহাসেন, রোয়ানু, মোরা, নার্গিস, ফণী ও বুলবুল ইত্যাদি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আসলো আম্পান। এবারের নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড।  ‘আম্পান’ অর্থ শক্তিমান বা শক্তিশালী।

আগে ঝড়ের কোন নামকরণ করা হত না। পরে দেখা যায় যে, ঝড়ের বিশেষ নামকরণ করতে তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থাকে কার্যকরী করতে সহায়ক হয়। কারণ, ঝড়টিকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এজন্য ঝড়ের সংক্ষিপ্ত, বিশেষ নাম এক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

বর্তমানে ক্রান্তীয় সাইক্লোন ও হ্যারিকেনের নামকরণের জন্য রয়েছে একটি যথাযথ ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা। এখনকার এই ঝড়টির মতো ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক সংস্থা তাদের বার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক বৈঠকে এই নামগুলি চূড়ান্ত করে। 

পাঁচটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন রিজিওনাল সংস্থা রয়েছে। এগুলো হল-ইএসসিএপি/ডব্লুএমও টাইফুন কমিটি, ডব্লুএমও/ইএসসিএপি প্যানেল বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস, আরএ ওয়ান ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি,  আরএ ফোর হ্যারিকেন কমিটি ও আরএ ফাইভ ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি।


সর্বশেষ সংবাদ