জ্বর-সর্দি নিয়ে কর্মচারীর মৃত্যু, কম্পিউটার কাউন্সিলে করোনা আতঙ্ক

  © ফাইল ফটো

সর্দি, কাশি আর জ্বরের উপসর্গ নিয়ে এক নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু হওয়ার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি)।

কাউন্সিলে দায়িত্ব পালনরত এই আনসার সদস্য সম্প্রতি এসব উপসর্গের কারণে ছুটি নিয়ে রংপুরের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে থাকাবস্থাতেই মৃত্যু হয় তার। আর এই ঘটনা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কাউন্সিলে।

এই উদ্বেগ সম্বলিত একটি চিঠির সূত্র ধরে কম্পিউটার কাউন্সিলের বাকী আনসার সদস্যদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এমন সময়ে এই ঘটনাপ্রবাহ ঘটছে, যখন সারা পৃথিবীতেই মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত দশ জনকে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এই ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম উপসর্গই হচ্ছে জ্বর, সর্দি ও কাশি।

গত রবিবার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছুটি নিয়ে রংপুরের বাড়িতে যাবার পর গত ১১ই মার্চ ওই আনসার সদস্য মারা যান।

তার মৃত্যুর পরদিনই, অর্থাৎ ১২ই মার্চ আরেক আনসার সদস্য একই উপসর্গের কারণে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনার পরই উদ্বিগ্ন কাউন্সিল চিঠিটি লেখে।

চিঠিটি ঢাকার জেলা প্রশাসক; সিরাজগঞ্জ ও রংপুরের সিভিল সার্জন এবং আইইডিসিআর'র পরিচালকে পাঠানো হয় বলে উল্লেখ আছে।

এতে আরো লেখা হয়েছে, আইসিটি টাওয়ারের ওই কাউন্সিল কার্যালয়ে প্রায়ই যাতায়াত করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় ছেলে সজীব ওয়াজেদ এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং সচিবও তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালনা করেন।

এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা ও প্রকল্পের প্রায় ৩০টি অফিস এই টাওয়ারে অবস্থিত। যার কারণে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ সেখানে যাতায়াত করে।

যেহেতু করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে, সেহেতু বিসিসি-তে কর্মরত আনসার সদস্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলছেন, আনসার সদস্যের মৃত্যু এবং তার উপসর্গের কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই এ চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেন।

‘‘আমি বললাম চিঠিটা লিখে সবাইকে অবহিত করতে।’’

অবশ্য ওই আনসার সদস্যের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছেন বলে উল্লেখ করেন মি.আহমেদ।

‘‘কিন্তু যেহেতু তার সঙ্গীরা বলেছেন যে, তার সর্দি-কাশি ছিল। করোনাভাইরাস যেহেতু চলছে তাই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’’

‘‘এটা লুকানোর কিছু নয়, ভয়ের কিছু নয়, এটাকে প্রতিরোধ ও মোকাবেলা করতে প্রস্তুত হওয়ার জন্যই সতর্কতার অংশ হিসেবে এই নির্দেশ দিয়েছিলাম,’’ মিস্টার আহমেদ বলেন।

এছাড়া আইসিটি বিভাগের যাদের মধ্যে তাপমাত্রাসহ অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে তাদের সবাইকেও পরীক্ষা করানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিসিসি ভবনে প্রবেশের আগে হাত ধোয়া এবং তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য থার্মাল স্ক্যানার বসানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা


সর্বশেষ সংবাদ