ফাইভজির উন্নতিতে অনিশ্চয়তায় টেলিভিশনের ভবিষ্যত!

  © বিবিসি

পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল ইন্টারনেট যোগাযোগব্যবস্থা ফাইভজি নিয়ে সর্বত্রই নানান আলোচনা-সমালোচনা চলছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্প্রতি ফাইভজি চালু হয়েছে। আরও কিছু দেশে শিগগিরই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

এ প্রযুক্তির বিস্তারে হুমকির মুখে পড়েছে টেলিভিশন সম্প্রচারব্যবস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, সম্প্রচার জগতে টেলিভিশনের আধিপত্য কতটা টিকে থাকবে। অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ফাইভজি মানুষের আগামী দিনের জীবনযাপনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে।

এ প্রযুক্তিতে এমন কিছু নতুন সেবা গ্রহণের অভিজ্ঞতা মানুষ অর্জন করবে, যা বর্তমানে পাওয়া সম্ভব নয়। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, রিমোট রোবোটিক্স, এআর-ভিআর, গেমিং এবং আইওটি বা ইন্টারনেট অব থিংসের মতো সেবা এ প্রযুক্তিতে সহজলভ্য হবে।

অবশ্য কন্টেন্ট উন্নয়নের ক্ষেত্রে টেলিভিশনের জন্য এক অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে ফাইভজি। প্রচলিত যোগাযোগব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দুটি সীমাবদ্ধতা গতি এবং সীমিত ধারণক্ষমতা দূর করতে পেরেছে ফাইভজি।

ফলে আগামীতে টেলিভিশনগুলো তাদের আলট্রা-হাই-ডেফিনিশন বা ইউএইচডি টিভি সেট ব্যবহারকারী দর্শকের জন্য এইচডিআর (হাই-ডাইনামিক রেঞ্জ), এইচএফআর (হাই ফ্রেম রেটস) এবং বিস্তৃত রঙের সন্নিবেশ ঘটিয়ে উচ্চমানসম্পন্ন কন্টেন্ট পরিবেশন করতে পারবে।

টিভিগুলো ফাইভজির মাধ্যমে তাদের খবর, খেলাধুলা, মিউজিক ফেস্টিভ্যালের মতো অনুষ্ঠান যে কোনো স্থান থেকে কম খরছে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে। এরপরও প্রশ্ন উঠছে, টেলিভিশন কেন হুমকিতে? এ নিয়ে বিশ্লেষণী প্রতিবেদন করেছেন বিবিসি।

এর কারণ প্রথমত, বৈচিত্র্যময় কন্টেন্টের ব্যাপক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে ফাইভজি। ভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের বিকল্প মাধ্যমগুলো ফাইভজি প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে টেলিভিশনের চেয়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া ৩৬০ ডিগ্রি ভিজ্যুয়াল মিডিয়া এবং পরবর্তী প্রজন্মের অডিও ‘অ্যাডভান্সড সাউন্ড সিস্টেম’ ফাইভজির যুগে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

দ্বিতীয়ত, ফাইভজির কারণে নিজেদের জন্য ব্যবহার করে আসা স্পেকট্রাম হারাতে বসেছে টেলিভিশনশিল্প। এ শিল্পের হাতছাড়া হওয়া স্পেকট্রাম মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের ঝুলিতে জমা হচ্ছে।

বর্তমানে সি-ব্যান্ড ও কেইউ-ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সিতে চলে টেলিভিশনের সম্প্রচার। এর মধ্যে সি-ব্যান্ডে সম্প্রচার বেশি সুবিধাজনক। তবে এগুলোই টেলিভিশনের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে ফাইভজির কারণে। পরিষ্কারভাবে সি-ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি ফাইভজির দখলে চলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে টেলিভিশনের জন্য সহজ বিকল্প হচ্ছে সি-ব্যান্ড ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি কেইউ-ব্যান্ড ব্যবহার করা। তবে এজন্য সি-ব্যান্ডের চেয়ে বেশি সংখ্যায় স্যাটেলাইটের প্রয়োজন হওয়ায় খরচ বেশি হবে।

ফাইভজির নতুন প্ল্যাটফর্মেও আসতে পারে টেলিভিশন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ভবিষ্যতে সিক্সজি (৬জি) বা সেভেনজি (৭জি)-এর জন্য আরও অনেক বেশি স্পেকট্রামের দরকার হলে তখন টেলিভিশনের ভবিষ্যত কী হবে?


সর্বশেষ সংবাদ