বাংলাদেশকে ব্লাংক চেক দিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক

পদ্ম সেতু নির্মাণ নিয়ে শুরুতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ঋণ সহায়তা থেকে হাত গুটিয়ে নিলেও বর্তমানে সে মনোভাব থেকে ফিরে এসেছে বিশ্ব ব্যাংক। এবার বাংলাদেশকে ব্লাংক চেক দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই সাথে প্রয়োজন মতো টাকার পরিমান বসিয়ে নিতে বলেছে বৈশ্বিক এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) মার্সি টেম্বনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশকে ‘ব্লাংক চেক’ দিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, তোমাদের প্রয়োজন মতো টাকা লিখে নাও। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে অর্থায়নের ক্ষেত্রে আর কোনো লুকোচুরি থাকবে না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে প্রকল্প তৈরি ও অর্থায়নে প্রস্তুত। যত অর্থের প্রয়োজন হোক না কেন তা দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের পরামর্শও আমরা নেব।

দেশে ৮৮ শতাংশ ব্লু-ইকোনোমি (সমুদ্র অর্থনীতি) কাজে লাগানোর লাগানোর সুযোগ রয়েছে। এ খাতে কাজ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

ডেল্টা প্ল্যান প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নেদারল্যান্ডের পাশাপাশি ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক এগিয়ে আসবে। এ খাতে অর্থ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা দেবে। ফলে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। ডেল্টা প্ল্যানে যদি ভারতও আসতে চায়, তবে স্বাগত জানাব।

সড়ক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গ টেনে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেবে। বাংলাদেশের সড়ক উন্নয়নে যত টাকার প্রয়োজন তত টাকা দেবে সংস্থাটি। সড়কে বাস-বে (যাত্রী ওঠা-নামার জায়গা বা স্টপেজ), সড়কের পাশে চালকদের জন্য বিশ্রামাগারসহ নানা উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। এসব দেখে প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাংক।

নতুন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করবে সংস্থাটি। বাংলাদেশের বিষয়ে সংস্থাটির ইতিবাচক ধারণা হয়েছে। আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্থাটি অর্থায়ন করতে উন্মুখ।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) মার্সি টেম্বন বলেন, আমি বাংলাদেশকে নিজেই চিনে নিয়েছি। সুন্দরবন ছাড়া বাংলাদেশের সকল স্থানে ঘুরেছি। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত সুবিধাসহ আর্থিক বিষয়ে ব্যাপক উন্নত হয়েছে। তিনি বলেন, নদী, পানি ও ব্লু ইকোনোমিতে বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। মূলত আমি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ব্র্যান্ডিং করতে এসেছি। ব্লু-ইকোনোমির ৮৮ শতাংশ কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে।

এ সময় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ