ফেইসঅ্যাপে কতটা ঝুঁকিতে ব্যবহারকারীরা?

দুই বছর আগে ফেইসবুকে ফেইসঅ্যাপ নিয়ে খুব মাতামাতি শুরু হয়। কিছুদিন স্থায়ীত্ব হারানোর পর আবারও গত শনিবার থেকে নতুন সংস্করণের মাধ্যমে নিজেদের চেহারা বদল করছেন ব্যবহারকারীরা।কিন্তু তৃতীয় পক্ষের এসব অ্যাপ ব্যবহার নিয়ে অনেক আগে থেকেই ঝুঁকির কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি ফেইসবুকও তাদের প্লাটফর্মে তৃতীয় কোন পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করার আগে সতর্ক হতে বলেছে।

কারণ, এর আগে ফেইসবুকের মাধ্যমেই তৃতীয় পক্ষের অনেক অ্যাপ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি হাতিয়ে নিয়েছে। যার দায়ভার শেষ পর্যন্ত বর্তায় ফেইসবুকের ওপর। এবং এই নিয়ে অনেক ‘মাশুল’ গুণতে হয়েছে মাধ্যমটিকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাপটিতে লগইন করার পর যখন চেহারা বদল করতে যায় ব্যবহারকারীরা তখন তার ফটো গ্যালারির অ্যাক্সেস চায়। একই সঙ্গে ফেইসবুকের সঙ্গে অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইলে বা ফেইসবুক থেকে ছবি নিতে চাইলে সেটিরও অনুমতি দিতে হয় ব্যবহারকারীকে। এর ফলে অ্যাপটি চাইলেই ব্যবহারকারীর ফটো গ্যালারি নিজেদের জন্য নিয়ে নিতে পারে। একইভাবে ফেইসবুকের আইডি-পাসওয়ার্ডও নিতে পারে। এটা একটা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে।

সংবাদ মাধ্যম বিজিআর গত ৩ এপ্রিল একটি খবরে বলে, ফেইসবুকে তৃতীয় পক্ষ হয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ৫৪ কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দিয়েছে। ওই ব্যবহারকারীদের সেসব তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তৃতীয় পক্ষ একটি ক্লাউডে জমাও করেছে। যার মধ্যে অন্তত ২২ হাজার ব্যবহারকারীর ফেইসবুকের পাসওয়ার্ডও ফাঁস করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আপগার্ড বলছে, মেক্সিকো ভিত্তিক কালচারা কালেক্টিভা নামের ওই প্রতিষ্ঠান অন্তত ১৪৬ গিগাবাইট তথ্য নিজেদের কব্জায় নিয়েছে। এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর ফেইসবুক আইডি, পাসওয়ার্ড, কমেন্ট, লাইক, রিঅ্যাক্শন।

ওই ঘটনার পর ফেইসবুকের এক মুখপাত্র বলছেন, আমরা ডেভেলপারদের সঙ্গে করে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে কাজ করছি। কিন্তু তৃতীয় পক্ষের কিছু অ্যাপ এমন সব কাজ করছে যাতে ফেইসবুক বিব্রত হচ্ছে।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেইসবুকের অন্তত পাঁচ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে। পরে একইভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ফেইসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয়।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাও ফেইসুবকের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করছিল তখন। ফেইসঅ্যাপ নিয়েও ২০১৭ সালে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলেন অনেকেই।


সর্বশেষ সংবাদ