ঢাবির অজানা ২০ তথ্য! ভিসি হয়েও নাম নেই, সনদ পাননি শামসুর-ছফা-নির্মলেন্দু

১০০ বছরে পা রাখল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১০০ বছরে পা রাখল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

১৯২১ সালের ১ জুলাই ৬০০ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী এবং তিনটি আবাসিক হল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। যেসব প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষকতার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, তারা হলেন- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এফ সি টার্নার, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, জি এইচ ল্যাংলি, হরিদাস ভট্টাচার্য, ডব্লিউ এ জেনকিন্স, রমেশচন্দ্র মজুমদার, এ এফ রহমান, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৬০টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ১৮টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল ও ১৩৮টি উপাদানকল্প কলেজ, সাতটি অধিভুক্ত সরকারি কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার ১৫০ জন। পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ২ হাজার ১০ জন শিক্ষক।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে সব গণআন্দোলন ও সংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীসহ শহীদ হয়েছেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ১৯৬১ সালের আইয়ুব সরকারের জারি করা অর্ডিন্যান্স বাতিলের জন্য ষাটের দশক থেকে শিক্ষকদের দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই অর্ডিন্যান্স বাতিল করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ-১৯৭৩ জারি করেন। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে এবং পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।

আজ ১ জুলাই শতবর্ষে পা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শত বছরের প্রাচীন ক্যাম্পাসটি স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে অনেক জানা-অজানা ঘটনা প্রবাহ ও বাস্তবতার। চলুন আজকে এমনই ২০টি জানা-অজানা তথ্য জেনে আসি—

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৬০০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র ২১৩ একর জমি জুড়ে আছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।

২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষক, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সহায়তার কারণে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজ দুটির নামে নিজেদের দুটি হলের নামকরণ করে—জগন্নাথ হল, ঢাকা হল (যা বর্তমানে ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল)।

৩. ঢাবিতে তৎকালীন সময়ে নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। ১৯২১ সালে লীলা নাগের মেধা ও আকাঙ্ক্ষার কারণে তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর ড. হার্টস তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিশেষ অনুমতি দেন। তিনি ইংরেজিতে এমএ ক্লাসে ভর্তি হন। লীলা নাগ ছিলেন কলকাতার বিথুন কলেজ থেকে ইংরেজিতে বিএ পাশ করা শিক্ষার্থী। নারীদের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম হওয়ায় তিনি পদ্মভূষণ স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। লীলা নাগের পৈতৃক-নিবাস সিলেটে। জন্ম হয়েছিল আসামে। লীলা নাগ পরবর্তীতে বিপ্লবী অমিত রায়কে বিয়ে করেন এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইনের নাম বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তালিকায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা এবং রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদ দেওয়ার কারণে তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। উইকিপিডিয়া বলছে- একাত্তরের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অধিবেশনে যোগদানের জন্য জেনেভা যান। সেখানে জেনিভার একটি পত্রিকায় দু’জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু সংবাদ দেখে বিচলিত হয়ে ২৫ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক শিক্ষা সচিবকে পাকিস্তান দূতাবাসের মাধ্যমে প্রেরিত এক পত্রে লেখেন, “আমার নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর গুলি চালানোর পর আমার ভাইস চ্যান্সেলর থাকার কোন যুক্তিসংগত কারণ নেই। তাই আমি পদত্যাগ করলাম”। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল উপাচার্য বিহীন। পাকিস্তান সরকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েনকে তাদের কনভয়ে করে ঢাকায় নিয়ে এসে ১৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে বসায়। তাকে সহায়তা করেন ড. হাসান জামান, ড. মেহের আলি। স্বাধীনতার পর তিনজনই গ্রেফতার হন।

৫. ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হয়। পরবর্তীতে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

৬.স্বাধীনতার পর—১৯৬১ সালে স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের অর্ডিন্যান্স বাতিল করে জাতীয় সংসদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ১৯৭৩ পাশ হলে এ অর্ডিন্যান্স দ্বারা এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে।

৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে রয়েছে ছয় লাখ আশি হাজারেরও বেশি বই।

৮. ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম লীগ।

৯. ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মধুদা, তাঁর স্ত্রী, তাঁর ছেলে ও নবপুত্রবধূ।

১০. ঊনিশ শতকের শুরুতে বিক্রমপুরের শ্রীনগরের জমিদারের সাথে মধুদা’র দাদা নকরীচন্দ্রের ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাবি প্রতিষ্ঠিত হলে জমিদারী ব্যবসায় ঢাবি এলাকার দায়িত্ব পান নকরীচন্দ্র। নকরীচন্দ্রের মৃত্যুর পর মধুদা’র পিতা আদিত্য চন্দ্র মধুর ক্যান্টিন দেখাশোনার দায়িত্ব পান। ১৯৩৯ সালে পক্ষাঘাতে আদিত্য চন্দ্রের মৃত্যুর পর মধুদা ব্যবসা দেখার দায়িত্ব পান। এভাবেই বংশ পরম্পরায় চলে আসছে ঢাবির মধুর ক্যান্টিনের ব্যবসা।

১১. ১৯৭০ সালের ৮ মার্চ থেকে ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী সময়ে ঢাবিতে কোনো সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। স্বাধীনতার পর ঢাবির প্রথম সমাবর্তন ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। যা ছিল ৪০ তম সমাবর্তন। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরবেলা জাতির পিতা নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় সে সমাবর্তন আর অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর ৪০তম সমাবর্তন হয় ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর।

১২. কিংবদন্তী শিক্ষক ড. আহমদ শরীফ তাঁর চাচা আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সংগৃহীত পুঁথি সম্ভার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিনামূল্যে দেওয়ার শর্তে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পান। তাঁর পোস্ট ছিল সহকারী গবেষক। মূলত পুঁথি নিয়ে গবেষণার জন্যই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে তিনি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হয়েছিলেন।

১৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অনেক খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক অনার্স শেষ করেননি কিংবা করতে পারেননি। সে হিসেবে তাদেরও কেউ ঢাবি থেকে সনদপত্রও পাননি। এর মধ্যে রয়েছেন- শামসুর রাহমান, আবুল হাসান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও আহমদ ছফা।

এর মধ্যে আহমদ ছফা ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু পড়া অব্যাহত রাখেননি। পরে ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজ থেকে প্রাইভেটে পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শুধু তাই নয়, এমএ পরীক্ষা দেয়ার আগেই বাংলা একাডেমির পিএইচডি গবেষণা বৃত্তির আবেদন করেন তিনি এবং তিন বছরের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের জন্য মনোনীত হন।

পড়ুন:সৃজনশীলতা দেখানোয় ঢাবি ছাড়তে বাধ্য হন সৈয়দ শামসুল হক

১৪. বুদ্ধিজীবী, লেখক আহমদ ছফা ঢাবির শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ দেয়নি।

১৫. বাংলাদেশের সব জাতীয় আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষার্থীদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিলেও ভাষা শহীদ আবুল বরকত ছাড়া সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর রহমান—ঢাবির শিক্ষার্থী ছিলেন না।

১৬. রবি ঠাকুরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতার যে জনশ্রুতি চালু আছে তার দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেছেন, “কেউ কেউ কোনো প্রমাণ উপস্থিত না করেই লিখিতভাবে জানাচ্ছেন যে, ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ কলকাতায় গড়ের মাঠে রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে এক বিরাট জনসভা হয়। ওরকম একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল বটে, কিন্তু তাতে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি ছিল অসম্ভব, কেননা সেদিন তিনি কলকাতাতেই ছিলেন না। ১৯১২ সালের ১৯ মার্চ সিটি অব প্যারিস জাহাজযোগে রবীন্দ্রনাথের বিলাতযাত্রার কথা ছিল। তাঁর সফরসঙ্গী ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্র জাহাজে উঠে পড়েছিলেন, কবির মালপত্রও তাতে তোলা হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আকস্মিকভাবে ওইদিন সকালে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মাদ্রাজ থেকে তাঁর মালপত্র ফিরিয়ে আনা হয়। কলকাতায় কয়েক দিন বিশ্রাম করে ২৪ মার্চ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে চলে আসেন এবং ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে সেখানে বসে ১৮টি গান ও কবিতা রচনা করেন।

১৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে দু’বার উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয় কিন্তু উনি গ্রহণ করেননি।

১৮. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়; তার কোন দালিলিক প্রমাণ বা ভিত্তি নেই। এটা লোকমুখে প্রচলিত একটি ভিত্তিহীন কথা।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলামের দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময়ে বলা হয়েছিল— এই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীই হলে থাকবে। উপমহাদেশের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটাকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়। আসলে এর কোন দালিলিক প্রমাণ বা ভিত্তি নাই।

তিনি বলেন, আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তখন শুনতাম সলিমুল্লাহ মুসলিম হল হলো এশিয়ার বৃহত্তম হল; আর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন হলো এশিয়ার বৃহত্তম রেলওয়ে স্টেশন। এই কথাগুলো যেমন ভিত্তিহীন, তেমনি ঢাবিকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলাটাও ভিত্তিহীন।

১৯. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরের (বিকৃত) ইতিহাস অনেক শিক্ষার্থীই জানেন না। জানা যায়, ফ্রান্সের সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আন্দ্রো মালরো মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশে এসে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য আকুল ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রতিকূলতা ও সমস্যার কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ছাত্র-শিক্ষকদের সামনে কথা বলার এক মূহুর্তে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলো এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় যার জীবিত শিক্ষার্থীর চেয়ে মৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। তার নামে নামকরণ করা হয় ঢাবির ‘মল চত্বর’।

২০. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য পি জে হার্টগে ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর যোগদান করেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। পি জে হার্টগে ইহুদি ধর্মাবলম্বী ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ