‘উচ্চশিক্ষাটাই মেনে নিতে পারেনি ঢাবির প্রাক্তন ছাত্র মেহেদীর খুনিরা’

নিহতের মায়ের সাথে কথা বলছেন ইউএনও আতিক। ইনসেটে নিহত মেহেদী
নিহতের মায়ের সাথে কথা বলছেন ইউএনও আতিক। ইনসেটে নিহত মেহেদী  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থী মেহেদী মোস্তফাকে ধারালো ছুরি দিয়ে কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে তার তিন চাচাতো ভাই এবং চাচী। এমনটাই জানিয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষাটাই মেনে নিতে পারেনি মেহেদীর খুনিরা।

আজ বুধবার (২৪ জুন) ফেসবুকের এক পোস্টে আতিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘আজ সকালে হলের ছোট ভাই ঘাতকের হাতে অকালে প্রাণ হারানো মেহেদীর গ্রামের বাড়ি ভুয়াপুরের গাড়াবাড়িতে গিয়েছিলাম। ওর দুর্ভাগা বাবা ও মায়ের সাথে দেখার করার জন্য। তাদের মুখে সন্তানের এমন লোমহর্ষক খুনের হৃদয়বিদারক বর্ণনা শুনে মনটা বিষিয়ে গেলো।’

তিনি বলেন, ‘খুনী জিহাদ তার ঘরে ডেকে নেয় মেহেদীকে। ঘরেই ধারালো ছুরি নিয়ে প্রস্তুত ছিল তার অন্য দুই ভাই ও মা। চারজন মিলে ১৫ মিনিট ধরে ধ্বস্তাধস্তি করে করে ছুড়ি দিয়ে কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এসময় তার একমাত্র ছোটবোন ঐ ঘড়ে গেলে খুনী জিহাদ বলে তোর ভাইকে শুধু ঘা দেইনি, ঘা দিয়ে মোরানি দিয়ে দিছি। অর্থাৎ পেটের ভিতরে ছুড়ি ঢুকিয়ে নেড়েচেড়ে শেষ করে দিয়েছে। এসময় মেহেদী তার মাকে বলে মা আমাকে একটা ট্যাবলেট দাও, আমাকে বাঁচাও। মেহেদীর মা বলে বাবা মেহেদী আমাকে এতটা ভালবাসতো আমি মেহেদীকে ছাড়া কিভাবে থাকবো।’

ইউএনও আরও জানান, ‘মেহেদীর বংশে তার বাবা ও চাচা দুই ভাই। তাদের বংশের মেহেদীই ছিল একমাত্র ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন। এই উচ্চশিক্ষাটাই মেনে নিতে পারেনি ওরা। বংশ থেকে পুত্র সন্তান নিশ্চিহ্ন করাই ছিল খুনের উদ্দেশ্য। খুনী জিহাদ ছিল মেহেদীর চাচাতো চাচাতো ভাই। অর্থাৎ এক বাড়ির উপরে তাদের বাসা। মেহেদীর দাদী বলেন, এই জিহাদ এর আগে আমাকে দা নিয়ে মারতে আসছে কখনো তার বাবা মা ছেলেকে কিছু বলেনি। আজ সকালে জিহাদকে সাথে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার গারাবাড়ি গ্রামে খুন হয়েছেন ঢাবির আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মেহেদী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাই জিহাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে মামলার অন্য আসামীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ