জাতীয় স্বার্থে ঢাবি ভিসিরই পদত্যাগ করা উচিত— ছাত্র ইউনিয়ন

  © টিডিসি ফটো

ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেছেন, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করলে সবার আগে প্রয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ করা। ক্যাম্পাসের গাছ কাটা নিয়ে উপাচার্য যে মন্তব্য করেছেন তার প্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে তারা একথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ ও সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা হলেই জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হবে। যদি ঢাবি ভিসি আসলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষা করতে চান, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে চান তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে স্টেশন করা হচ্ছে তা সরানোর উদ্যোগ নিন। আর যদি সরকারের দালালীকেই নিজের কাজ মনে করেন; তবে মনে রাখবেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় দালালদেরকে সবসময় ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলেছে। ইতিহাসকে ভুলে যাবেন না’।

আরও পড়ুন: জাতীয় স্বার্থে ক্যাম্পাসের গাছ কাটা হচ্ছে— ঢাবি উপাচার্য

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে প্রতিদিন শত শত রোগীর স্যাম্পল বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণের কাজ চলছে, আর তার ঠিক নীচেই চলছে এরকম একটি অস্বাস্থ্যকর নির্মাণ কাজ। এই উপাচার্য বারবার প্রমাণ করেছেন, তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ, গবেষণার স্বার্থের থেকে সরকারের পদলেহনই মুখ্য। আজ যেই উপাচার্য জাতীয় স্বার্থের কথা বললেন, তিনি পদে থাকা অবস্থাতেই গণরুম সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে, গবেষণায় বরাদ্দ কমেছে, শক্তিশালী হয়েছে হলের উপর সন্ত্রাসীদের দখলদারিত্ব। অথচ এসব সমস্যা তিনি সমাধান না করে একের পর এক অর্থহীন কথা বলে লোক হাসিয়েছেন বিভিন্ন সময়। তিনি যদি সত্যিকার অর্থেই জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করতেন তবে বহু আগেই তিনি পদত্যাগ করতেন’।

তারা বলেন, ‘শিক্ষার মান হওয়া উচিত আমাদের দেশের জন্য ফার্স্ট প্রায়োরিটি। আমরা যখন বাজেটের আঠারো শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের কথা বলি, তখন উপাচার্যের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না। আমরা দেখতে পাই, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ভিসি শিক্ষাখাতের দুরবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই উপরন্তু একটা স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর উপর ছেড়ে দিচ্ছেন’।

তারা আরও বলেন, ‘ডাকসু বা প্রশাসন কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বাস্তু সংকট নিরসন করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রায় ১০ হাজার উদ্বাস্তু মানুষ বাস করে। তারা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করে, জড়িয়ে পড়ে ছিনতাইয়ের সাথে। টিএসসিতে একটি স্টেশন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্বাস্তু ও ভাসমান মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে। অপরদিকে কমবে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা’।

প্রসঙ্গত, প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধের সুযোগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিচারে গাছ নিধন চলছে— এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৯ মে) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় কাজের জন্য যেটা লাগবে, সেটা কাটতে হবে। তবে জাতীয় স্বার্থের বাইরে একটি গাছ কাটলেও আমি ব্যবস্থা নিব। তিনি বলেন, মেট্রোরেল জাতীয় কাজের অংশ, তাই তাদের যা করা দরকার; তা তো তারা কাটবেই’।