ঢাবি ক্যাম্পাসে এসে মারধরের শিকার প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন

মারধরের শিকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী রানা নাসের
মারধরের শিকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী রানা নাসের  © টিডিসি ফটো

ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে এসে মারধর এবং হেনেস্তার শিকার হয়েছেন প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি (সহ-সভাপতি) কামাল উদ্দিন ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফুলার রোডে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাদের উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের উপরও চড়াও হয় কামালের অনুসারীরা।

হেনেস্তার শিকার প্রাক্তন ওই ছাত্রীর নাম নুরহাদ ফারহানা। তিনি মার্কেটিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর মারধরের শিকার হয়েছেন প্রাক্তন ছাত্র রানা নাসের ও তার ছোটভাই বাপ্পী। রানা থিয়েটার ও পারফরমেন্স বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

জানা যায়, রানা নাসেরের ছোটভাই বাপ্পীকে চীনে পড়াশুনার জন্য পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে চীনে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত নুরহাদ ফারহানার দারস্থ হয় রানা। শুক্রবার রাতে রানা ও তার ভাইকে ফারহানা ফুলার রোডে আসতে বললে তারা সেখানে দেখা করতে আসে।

এসময় ফুলার রোডে ফারহানা ও বাপ্পীর মধ্যে আলাপচারিতা হয়। তখন রানা তাদের ওই জায়গায় বসিয়ে অন্য কাজে যায়। পরে ফারহানা ও বাপ্পীকে পেয়ে হেনাস্তা ও মারধর করে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে রানা নাসের ঘটনাস্থলে আসলে শিক্ষার্থীরা হলের ভেতরে পালিয়ে যায়। দৌঁড়ে পালানোর সময় এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ঘটনাস্থলে পড়ে যাওয়ার কারণে ওই শিক্ষার্থী তার মোবাইল ফোন নিতে আসলে রানা তাকে ধরে ফেলে। এসময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়।

এর কিছুপর ঘটনাস্থলে আসেন হল সাংসদের ভিপি কামাল। তিনি এসে জানতে চান, হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে কেন মারা হলো? পরে সবাইকে হলের ভেতরে নিয়ে যান ভিপি কামাল।

হলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হলে রানা ও তার ভাইকে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ফারহানাকে হেনস্তা করা হয়। এসময় তাদের উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাদের উপরও চড়াও হয় কামালের অনুসারীরা। পরে প্রক্টরিয়াল টিম তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। 

এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী নুরহাত ফারহানা বলেন, আমি চায়নাতে পড়াশোনা করছি। ছুটিতে দেশে এসেছি। রানা নাসের আমার কাছের ছোট ভাই। তার ছোটভাই চায়নাতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যেতে চায়। তাই সে এ বিষয়ে আমার কাছে জানতে চায়।

তিনি বলেন, গতকাল রাতে আমি ও রানার ছোট ভাই বাপ্পি ফুলার রোডে কথা বলছিলাম। এমন সময় কিছু শিক্ষার্থী আমাদের কাছে এসে বাপ্পিকে জিজ্ঞেস করে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা। বাপ্পি কিছু বুঝে উঠার আগে কিছু বলতে না বলতেই ওই শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে।

থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রানা নাসের বলেন, আমার ছোট ভাইকে চায়নাতে পড়াশোনার জন্য পাঠাতে চায়। তাই আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় আপুর দ্বারস্থ হয়। আপুর সঙ্গে দেখা করতে এসে আমরা মারধরের শিকার হয়েছি।

এসএম হলের ভিপি কামাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।


সর্বশেষ সংবাদ