ঢাবির হলে কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি

  © সংগৃহীত

ইট-পাথরের শহীদ মিনার নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে। তাই কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। হল সংসদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যােগে বৃহস্পতিবার রাতে এ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। শুক্রবার সকাল থেকে নবনির্মিত মিনারে মিনারের বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় হলের শিক্ষার্থীরা।

হলের শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিষ্ঠার ৬ বছর পার হয়ে গেলেও দীর্ঘদিন কোন শহীদ মিনার ছিল না হলে। ফলে শিক্ষার্থীদেরকে সরাসরি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেও নিজের হলে থেকে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারতো না। বৃহস্পতিবার রাতে ৭টি কলা গাছের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীরা। ৭টি কলা গাছ ও ফুল দিয়ে হলের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে শহীদ মিনারটি স্থাপন করা হয়।

বিজয় একাত্তর হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) সজিবুর রহমান সজিব বলেন, হলে কোন শহীদ মিনার না থাকায় হল সংসদের পক্ষ থেকে এই অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে হলের শিক্ষার্থী, কর্মচারী কর্মকর্তাসহ সকলেই ফুল দিয়ে আমাদের ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

তিনি বলেন, শৈশবে গ্রামে বসবাসকালীন সময়ে কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করা হতো। কায়িকশ্রমে তৈরী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতাম। তখনকার সময়ে ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের মহান দিক সম্পর্কে খুব বেশী কিছু না জানলেও এখন বুঝি অনেক কিছুই জানি, বুঝি। এতদিন হলে শহীদ মিনার ছিলো না, আজকের এই উদ্যােগের মাধ্যমে শহীদদের ত্যাগ স্থায়ী করতে হল প্রশাসনের নিকট দাবি জানাবো।

হল ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) আবু ইউনুস বলেন, বিজয় একাত্তর হল মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরাগের স্মারক। অথচ হলটিতে কোন মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে, ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামের অধ্যায়কে স্মরণীয় করে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ কিংবা কোন স্থাপনা না থাকাটা দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছে, যা এই অসংগতি দূর করবে বলে বিশ্বাস করি।

হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, শিক্ষার্থী এবং হল সংসদের এ উদ্যাগ প্রশংসনীয়। এতদিন হল সংসদ ছিলো না, শিক্ষার্থীদের মাঝে সেভাবে সচেতনতাও তৈরী হয়নি। এখন হল সংসদ হওয়ার কারণে সে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করি, এ অস্থায়ী শহীদ মিনার অতিদ্রুত পূর্ণাঙ্গ রুপ লাভ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ