ভবিষ্যৎ ভিপি-জিএস প্রার্থী কে— চার নেতার নাম বললেন মামুন

  © টিডিসি ফটো

আগামী ২৩ মার্চ দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মেয়াদ শেষ হবে। ডাকসুর বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব উঠলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগামী নির্বাচনের ভিপি-জিএস প্রার্থী নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ।

ডাকসুর বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি (ভিপি) হিসেবে আছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক নুর। তবে আগামী নির্বাচনে তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে ঘোষণা দেয়ায় ছাত্র পরিষদের মধ্যে হিসাব পাল্টাতে শুরু করেছে।

ভিপি-জিএস-এজিএস পদে কে লড়বেন-এ প্রশ্নের জবাবে পরিষদের নেতারা বলছেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় তিন এবং ঢাবির দুই নেতার মধ্য থেকেই এসব পদে মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে কাকে কোন পদে মনোনয়ন দেয়া হবে, সেটি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সংগঠনের একাধিক নেতা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে নুর প্রার্থী না হলে সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুনই সেই পদের প্রার্থী হবেন।

অন্যদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং ভিপি-জিএস পদপ্রার্থী সম্পর্কে সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে সাধারণ ছাত্র পরিষদের চার নেতার নাম জানিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে হাসান আল মামুন বলেন, আমরা ডাকসু নির্বাচন হওয়া নিয়েই সংশয়ের মধ্যে আছি। আমি গতবার নির্বাচন করতে পারিনি। তবে এবার আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। সাধারণ ছাত্রদের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করতে চাই।

নির্বাচনে প্রার্থী হলে কোন পদে লড়বেন এমন প্রশ্নের জবাবে মামুন বলেন, এটা আমাদের সাংগঠনিক আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে। যে যে পদের জন্য যোগ্য তাকে সে পদের জন্যই মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে ভিপি-জিএস এবং এজিএস পদের জন্য মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, ফারুক হোসেন, আখতার হোসেন এবং বিন ইয়ামিন মোল্লার মধ্যে থেকেই প্রার্থী দেয়া হবে। কারণ এরা সবচেয়ে পরীক্ষিত নেতা।

আলোচনায় থাকা সংগঠনের কেন্দ্রীয় তিন নেতার মধ্যে রয়েছে-পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন এবং আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন। এদের মধ্যে মামুন এমফিলের (মাস্টার অব ফিলোসফি) ছাত্র। রাশেদ এমবিএর (রেগুলার) ছাত্র। আর ফারুক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সান্ধ্যাকালীন মার্স্টাসে পড়ছেন।

আর সংগঠনের ঢাবির দুই নেতার মধ্যে রয়েছে-পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন। বিন ইয়ামিন মোল্লা লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আর আখতার আইন বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষে পড়ালেখা করছেন।

এছাড়াও আলোচনায় আছেন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), মাহফুজ খান ও সোহরাব হোসেন (তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ)। তবে গত কমিটিতে সমাজসেবা সম্পাদক আখতার এবার ভিপি-জিএস কোন একটি পদে লড়বেন বলে জানা গেছে।

পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সব সময় পাশে ছিল ছাত্র অধিকার পরিষদ। ক্ষমতাসীনদের শত নির্যাতনের পরও তারা সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছেন। তাই সাধারণ ছাত্ররা ডাকসুর প্রতিনিধি হিসেবে তাদের চায়। তাদের দাবি নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ভিপি, জিএস এবং এজিএস তিন পদেই তারা জয়ী হবেন।

ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) ও পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, আমি ডাকসুতে নতুন নেতৃত্ব দেখতে চাই। আমি চাই নতুন কেউ এই পদে আসুক। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে ছাত্রসংসদের সবচেয়ে বড় পদে আমি নির্বাচন করে জয়ী হয়েছি। তাই আবার একই পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আমার নেই। নানা প্রতিকূলতা সত্ব্বেও ছাত্ররা ভোট দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি ভিপি হওয়ার আগেও সাধারণ ছাত্রদের দাবির প্রতি সোচ্ছার ছিলাম, ভিপি হওয়ার পরও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।

নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের অনেক কার্যকর নেতৃত্ব আছে, তাদের মধ্য থেকেই একজন ভিপি পদে নির্বাচন করবেন। এছাড়া ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন আছেন। সংগঠনের আহবায়ক হাসান আল মামুন. রাশেদ খানঁ ফারুক হাসান এদের হাতেই আগামী দিনের নেতৃত্ব থাকবে বলেও জানান তিনি।

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাধারণ ছাত্রদের পাশে ছিলাম। সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলন করার কারণে জেলও খেটেছি। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আবারও জেল খাটব। ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। এক্ষেত্রে নিজেকে ভিপি অথবা জিএস পদটির জন্য দাবিদার বলে মনে করি।


সর্বশেষ সংবাদ