১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:১১

‘টাকা উপার্জনের জন্য অসৎ পন্থা বেছে নেয় সেই ছাত্র’

  © সংগৃহীত

গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত না থাকলেও ফেঁসে গেছেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অথিত সরকার। এ ঘটনায় যাচাই-বাছাই না করে সংবাদ প্রকাশ করায় ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হয়েছে। রিমান্ড শেষে এরইমধ্যে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ওই ছাত্রকে।

এ ঘটনায় ঢাবি প্রশাসন বলছে, বিষয়টি প্রসঙ্গে তারা অবগত। তবে টাকা উপার্জনের জন্য এ ধরণের অসৎ পন্থা অবলম্বন করা কোনভাবেই কাম্য নয়। 

এদিকে, ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় আগামী সপ্তাহে চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার মো. মশিউর রহমান বলেন, এখন আমরা চার্জশিট প্রস্তুতের কাজ করছি। আগামী সপ্তাহের যে কোনোদিন মজনুর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।

ডিবি জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অথিত নিজেকে বেঙ্গলিপেজেন্টডটকম-এর উপদেষ্টা সম্পাদক পরিচয় দিলেও ওই পোর্টালের কোনো অফিস নেই। কোনো জনবলও নেই। অথিত একটি ওয়েবসাইট নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে কিছু টাকা দিয়ে পোর্টালটি বানিয়েছে। তার মোবাইল ফোন থেকেই সেটি পরিচালনা করা হয়। কোথাও কোনো চাঞ্চল্যকর খবর পেলে তা কপি করে সরাসরি তার ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। পরে সেটা দেয়া হয় ইউটিউব চ্যানেলে।

ডিবি পুলিশের কাছে অথিত সরকার জানিয়েছেন, আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে তিনি ইউটিউব চ্যানেলে গুজব ছড়ান। তার ধারণা ছিল ইউটিউব চ্যানেলটি ভাইরাল হলে সেখান থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করতে পারবেন। কারণ ইউটিউব কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ ভিউয়ার্স চ্যানেলের মালিককে পেমেন্ট করে থাকে। ডিবি জানায়, অথিতের ধারণা সঠিক ছিল। কারণ, ভিডিওটি ইউটিউবে দেয়ার পর দ্রুত অনেকসংখ্যক লাইক, শেয়ার থাকে। এতে তার অ্যাকাউন্টে গুগলের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বেশকিছু ডলার যোগ হয়েছে।

কারাগারে থাকা ঢাবির সেই ছাত্রের ব্যাপারে আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে আমরা অবগত। তবে ওই ছাত্রটি টাকা উপার্জনের জন্য যে অসৎ একটি পন্থা বেছে নিয়েছে, তা কোনভাবে কাম্য নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে কি ধরণের আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা আমরা দেখে তারপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলার অদূরে শেওড়া এলাকায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠে রওনা হন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যার ৭টার দিকে ভুল করে এক স্টপেজ আগেই কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নেমে যান তিনি। পরে সেখান থেকে ফুটপাত ধরে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ওই সময় ধর্ষণের শিকার হন তিনি।

রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে প্রথমে বান্ধবীর বাসায় যান ভিকটিম এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে পরদিন ক্যান্টনমেন্টন থানায় অজ্ঞাতনামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর তিনদিন পর র‌্যাব-১ এর একটি দল ধর্ষক মজনুকে শ্যাওড়া রেল ক্রসিং থেকে গ্রেফতার করে।