রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয়া ছাত্রের পাশে সেই রাজুর খালা

মুকিত ও আম্বিয়া আহমেদ
মুকিত ও আম্বিয়া আহমেদ  © টিডিসি ফটো

‘শিবির সন্দেহে’ ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে মারধরের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরী বুধবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তার অবস্থান কর্মসূচীতে সংহতি জানাতে এসেছিলেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন হোসেন রাজুর মেজ খালা।

বুধবার সন্ধ্যায় সংহতি জানাতে রাজুতে ছুটে আসেন রাজু ভাস্কর্যের নাম যার নামে দেয়া সেই রাজুর খালা আম্বিয়া আহমেদ। আম্বিয়া বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী। কয়েকদিন হল তিনি ঢাকায় এসেছেন। গতকাল রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার খবর শুনে আজ ছুটে আসেন রাজু ভাস্কর্যে। বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান।

ফারুক বলেন, ছাত্রলীগের বর্বর নির্যাতনের শিকার মুকিমের সাথে সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্য যার নামে সেই রাজুর আপন মেজ খালা লন্ডন প্রবাসী আম্বিয়া আহমেদ। এসময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলের গেস্টরুম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। নির্যাতনের পরে ওই শিক্ষার্থীদের শাহবাগ থানার পুলিশ হেফাজতে দিয়ে আসে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের নিয়মিত গেস্টরুম চলছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়। সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তাদের অনুসারীদের দিয়ে মুকিমকে প্রথমে মানসিক চাপ দেয়। এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্টাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে।

পরে তার ফোনের চ্যাটলিস্ট দেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতারা। মারধর সহ্য করতে না পেরে তারা উভয়েই মেঝেতে বসে ও শুয়ে পড়ে।

এর কিছুক্ষণ পরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন ও একই বর্ষের আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত তাদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতন করতে থাকে ছাত্রলীগ নেতারা। পরে তাদেরকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।