প্রথম আলো সম্পাদকের গ্রেফতারি পরোয়ানার নিন্দা নুরের

  © ফাইল ফটো

রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানার নিন্দা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুলহক নুর।

গকতাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি লেখা শেয়ার করেন তিন। নিচে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য নুরের লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হল—

‘প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় একজন ছাত্র মারা যাওয়ায় দায়িত্ব অবহেলা জনিত কারণে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ মতিউর রহমান, সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

নাঈমুলের মৃত্যুতে অনুষ্ঠান আয়োজকদের কোন ধরণের দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। একই সাথে সরকারের দুর্নীতি-দুঃশাসন, ব্যর্থতা ও ফ্যাসিজমের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ পরিবেশন করার কারণে প্রথম আলো পরিবারকে এমন হয়রানি করা হলে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

পাশাপাশি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার মৃত্যুতে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে বুয়েটের আবরার, ঢাবির হাফিজ, আবুবক্কর, ঢামেকের রাজিব, জাহাঙ্গীরনগরের জুবায়ের, দর্জি বিশ্বজিৎ, চট্টগ্রামের দিয়াজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের হাতে নিহত অসংখ্য শিক্ষার্থী হত্যায় দায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি/সম্পাদকের নামে কী গ্রেফতারি পরোয়ানা বা গ্রেফতারে রুল জারি হয় না? তাদের কী কোন দায় নেই? তাদের বিরুদ্ধে সরকার কি কোন ব্যবস্থা নিয়েছে নাকি পুরস্কৃত করেছে?

বেহাল সড়ক, অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল, কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা না থাকাসহ নানা কারণে গত ১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭২২১ জন। এখানে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কী কোন দায় নেই? তাদের বিরুদ্ধে কখনোও কী কোন মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে? কাউকে কী দায়িত্ব থেকে থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে? নৈতিক দায়বদ্ধতা থেকে কেউ কি তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করেছে?

একইভাবে, গত ১ বছরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭০০ জন নারী। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কী এতে কোন দায় নেই? কারো বিরুদ্ধে কী কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’

এ ব্যাপারে ফোনে নুরের মন্তব্য জানলে তিনি বলেন, ‘দেশে ভিন্নমত ও বাক-স্বাধীনতার উপর সরকারের যে দমন-পীড়ন চলছে এটিই তারই উদাহরণ। ভিন্নমতের উপর হামলা চালিয়ে মামলা করে এভাবেই এই ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১ নভেম্বর প্রথম আলোর কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাঈমুল আবরার (১৫)। সে নবম শ্রেণির (দিবা) ‘গ’ শাখার ছাত্র ছিল। ঘটনার পরদিন প্রথমে মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান।

পরে ৬ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে আরেকটি মামলা করেন আবরারের বাবা। মামলায় পেনাল কোডের ৩০৪ ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়। আদালত অপমৃত্যুর মামলার সাথে এই মামলার তদন্তের নির্দেশ দিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।


সর্বশেষ সংবাদ