শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে রাজনীতি করে ছাত্রলীগ: ভিপি নুর

ভিপি নুর
ভিপি নুর  © ফাইল ফটো

শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে রাজনীতি ও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক দাস প্রথা চালু করেছে ছাত্রলীগ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি (সহ-সভাপতি) নুরুল হক নুর। বৃহস্পতিবার আলোচিত গেস্টরুম-গণরুম নিয়ে ডাকসু ভিপির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ঢাবি প্রতিনিধিকে তিনি এ কথা জানান।

এসময় ভিপি নুর বলেন, ‘গেস্টরুম-গণরুম ছাত্র সমাজের জন্য দুঃখজনক। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সে দলের ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয় সম্পত্তি মনে করে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হল চালানোর কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের। কিন্তু হল চালায় সরকারের সংগঠন। শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো হয়। যারা প্রোগ্রাম করতে অনিচ্ছুক তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়া হয় কিন্তু হল থেকে বের করতে হলে তো সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটু বোঝানো লাগবে, তখন নানা ধরনের ভিন্নমতের ট্যাগ দেয়া হয় যে জামাত-শিবির। এ ধরনের ট্যাগ দিয়ে তাদেরকে নির্যাতন করা হয়। অনেকে গেস্টরুম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। ২০১৭ সালে ছাত্রলীগের গেস্টরুম নির্যাতনের শিকার হাফিজুর মোল্লা নামে এক শিক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করে।’

শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ছাত্রলীগ রাজনীতি করে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেধা দিয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু তারা এত কষ্ট করে তাদের এখানে থাকতে হয় একটি যদি সারা বিশ্ববাসী জানতো তাহলে তারাও ভেবে লজ্জিত হত যে বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো আধুনিক দাস প্রথা চালু রয়েছে। ছাত্রলীগের প্রোগ্রামের বিনিময়ে হলে থাকতে হয়, প্রোগ্রাম না করলে হলে থাকা যায় না। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আসে তাদের হলে থাকা লাগে। তাদের এই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ছাত্রলীগ তাদেরকে দিয়ে রাজনীতি করে। তাদের বলে, আমরা তোমাদের হলে সিট দিব, হল প্রশাসন সিট দেয় না বা দিবে না তোমরা আমাদের মাধ্যমে হল উঠো।’

কেন এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২৭ বছর পর ডাকসু হয়েছে শিক্ষার্থীরা ভেবেছিল অন্তত এই নিপীড়ন থেকে তার মুক্তি পাবে। জোর করে ছাত্রলীগের মিছিল মিটিং তাদের দাসত্ব গোলামী থেকে তারা মুক্তি পাবে। কিন্তু ডাকসুতে ছাত্রলীগের একটি বড় অংশ থাকায় হলগুলোতে তাদের দখলদারিত্বের কারণে ডাকসু নির্বাচনের পরে খুব একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসেনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার লিখিত ও মৌখিকভাবে বলেছি কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

শিক্ষার্থীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীর অনেক ভয় এবং আতঙ্কে থাকার কারণে নির্যাতনের কথা বলতে পারেনা। যারা ভিকটিম তারা যদি প্রতিবাদ না করে তাহলে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাব, আপনার এই সন্ত্রাস দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। তাহলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব’।


সর্বশেষ সংবাদ