১৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:০০

শাহবাগ অবরোধ ঢাবি শিক্ষার্থীদের, যান চলাচল বন্ধ

  © টিডিসি ফটো

সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন বন্ধ করার দাবি আজ আবার শাহবাগ অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

পরে দুপুর পৌনে ২টার দিকে শাহবাগ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাড়াও বিভিন্ন হলের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। শাহবাগ অবরোধ করার কারণে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন, সংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস, জিএস কাজল দাশ প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন হল সংসদের ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ। হাইকোর্টের উপর বন্দুক রেখে নির্দেশ দিয়ে আমাদের গায়ে আগুন ঢেলে দেবেন না। আপনারা (ইসি) নিজে তার উদ্যোগ নেন, আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। আমাদের হাইকোর্ট দেখালে আপনাদের সুপ্রিম কোর্ট দেখিয়ে ছাড়ব।

প্রগতিশীল আইনজীবীদেরে এ দাবি আপিল বিভাগে তোলার আহবান জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে অনতিবিলম্বে তারিখ পরিবর্তনের করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। এসময় শিক্ষক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন,সশীল সমাজ, ক্রিয়াশীল সমস্ত ছাত্র সংগঠনকে অপমান, অধিকার হরণের বিষয়ে একতাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন তিনি।

রাজু ভাস্কর্যে শিক্ষার্থীদের মাননবন্ধন

আসিফ তালুকদার বলেন, ‘অত্যান্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আজ গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ। সে মুহূর্তে ইসির সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারি না। ছাত্রসমাজকে হাইকোর্টের ভয় দেখাবেন না, আমরা আপনাদের সিদ্ধান্তকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেব।

উৎপল বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দিয়েছি। তারপরেও কেন দাবি মেনে নেওয়া হলো না তা আমরা জানতো চাই। একইদিনে সার্বজনীন উৎসব স্বরস্বতী পূজা এবং নির্বাচন কখনো হতে পারেনা। কারণ শিক্ষার্থীরাসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পূজা পালিত হয়। একই তারিখে যদি নির্বাচন হয় তাহলে উৎসবের আনন্দ হবে না, তাই আমরা চাই এ দিনে যেন নির্বাচন না হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গতকাল ১৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পরেও কেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো না, তার সুস্পষ্ট জবাব চাই। আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।’

এসময় কতদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এ প্রশ্নের জবাবে উৎপল বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘পূজার দিনে নির্বাচনে মানি না, মানি না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘৩০ তারিখের নির্বাচন মানি না, মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষ করে নির্বাচন কমিশন অফিস অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করার জন্য রওনা দিলে শাহবাগ মোড়ে বাঁধা দেয় পুলিশ। পরে তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা শাহবাগ অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

এর আগে গতকাল ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ পেছানো না হলে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়ে আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারিখ পেছানোর দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধও করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ পরিবর্তনের আবেদন জানিয়ে করা রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে ৩০ জানুয়ারিই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ পথচারীরা ও যাত্রীরা।