ভিসিদের কাছে শিক্ষক পরিচয় নয়, রাজনৈতিক পরিচয় বড়

সাবেক ভিসি ড. এস এম এ ফায়েজ
সাবেক ভিসি ড. এস এম এ ফায়েজ  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাবেক ভিসি ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, একজন শিক্ষকের কাছে রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে শিক্ষক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় ভিসি বা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে শিক্ষক পরিচয়ের থেকে রাজনৈতিক পরিচয়টাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

শনিবার (০৪ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি সমস্যা : প্রতিকার ও করণীয়’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই)। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সদস্য সচিব মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর।

ভিসি ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব কোনভাবে কাম্য নয়। পদের প্রতি মোহ থাকলে কোন শিক্ষকের কখনোই ভিসি বা কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়া উচিত নয়।

এ সময় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এস এম এ ফায়েজ, ঢাবির কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমীন, সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, বাকশিস নেতা অধ্যাপক ইসহাক আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, সব পর্যায়ে ভর্তি সমস্যার মূলে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব। মানসম্মত স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজধানী কেন্দ্রীক হয়ে গেছে। তাই কোনো কোনো স্কুলে ভর্তি হতে কয়েক লাখ টাকা ডোনেশন দিতে হচ্ছে। আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক স্কুল শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। একইভাবে শহর কেন্দ্রীক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিযুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও অনেক আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে।

লিখিত প্রবন্ধে বলা হয়, রাজধানীর নামীদামি স্কুলগুলোতে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। ২০০ আসন ফাঁকা থাকলে ১৫০ শিক্ষার্থী নিয়মমাফিক ভর্তি করা হয়। বাকি আসনগুলোতে টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় বলে প্রবন্ধে দাবি করা হয়।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, গত শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি আসনের জন্য ৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি আসনের জন্য ৩৪ জন এবং মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮১৫ আসনের জন্য ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। কিন্ত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক আসন ফাঁকা রয়েছে। মেধা তালিকা থেকে মাত্র ২৫৮ জন ভর্তি হয়েছে। একইভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শেষে দেখা যায় ৮৭২ আসন শূন্য রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে আ ন ম এহছানুল হক মিলন কারিগরি শিক্ষায় জোর দিতে কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানান। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষাই পারে বাংলাদেশকে বদলে দিতে। এজন্যই রসায়নের শিক্ষার্থী হয়েও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছি কারিগরি শিক্ষার ওপর। ২৩টি মন্ত্রণালয় কারিগরি শিক্ষার জন্য কাজ করছে। কিন্তু এ জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় নেই।


সর্বশেষ সংবাদ