অবশেষে চিঠি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ, অপেক্ষায় রুশাদ ফরিদী

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে অবৈধ আখ্যায়িত করে আদালত রায় দিয়েছেন। তবে এখনো ক্লাসে ফিরতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী।

ক্লাসে ফেরার জন্য একাধিকবার চিঠি দিতে গেলেও তা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্লাসে ফেরার আকুতি জানিয়ে তাই বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন তিনি।

তবে শেষমেষ রুশাদ ফরিদীর চিঠি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন অপেক্ষায় আছেন সিদ্ধান্তের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য তিনি নিজেই জানিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রায় এসে পৌছেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। এর মধ্যে কনভোকেশন গেল। তাই আমার আন্দোলন আপাতত স্থগিত ছিল। এর মধ্যে পূর্ণ রায়ের বিষয়টি জানিয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানকে মাধ্যম করে রেজিস্ট্রার বরাবর যোগদানের চিঠি দেয়ার জন্য বিভাগে গেলাম।

সেখানে আবারো আমাকে জানানো হলো যে, বিভাগের চেয়ারম্যানের পরিষ্কার নির্দেশনা যে মাধ্যম হয়ে কোন চিঠি যেন রিসিভ না করা হয়। এরপর অগত্যা সরাসরি রেজিস্ট্রারের অফিসে যেয়ে চিঠি জমা দিয়ে আসলাম। এখন দেখছি আর অপেক্ষা করছি, যেই পূর্ণ রায়ের কপি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক চুল নড়তে পারছিলেন না, সেটি পাওয়ার পর নড়তে চড়তে এখন কতদিন লাগে।’

ক্লাসে ফেরার সুযোগ দেয়ার দাবিতে কয়েকদিন ধরেই অবস্থান কর্সূচি পালন করছেন ড. রুশাদ ফরিদী। তার ব্যানারে লেখা, ‘আমি শিক্ষক, আমাকে ক্লাসে ফিরে যেতে দিন’। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য না দেয়ায় এ নিয়ে ক্রমেই সমালোচনা বাড়ছে।

ক্লাসে ফিরতে না পারলেও সিঁড়িতে ক্লাস নেয়াও শুরু করেন ড. রুশাদ ফরিদী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সিঁড়িতে তিনি ক্লাস নেয়া শুরু করলে তাতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

ক্লাস নেয়ার বিষয়ে ড. রুশাদ ফরিদী বলেন, ‘ক্লাস নেয়ার প্রস্তাব আসলে আমার ছাত্রদের পক্ষ থেকে এসেছে। আমাকে একটা ক্লাস নিতে দেওয়া হচ্ছে না যার কারণে আমাকে সিঁড়িতেই ক্লাস নিতে হলো। শিক্ষার্থীরা যদি চায়, তাহলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ড. রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর এক সপ্তাহ পর ১৯ জুলাই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করেন তিনি।

চলতি বছরের ২৫ আগস্ট বাধ্যতামূলক ছুটির বিষয়টি অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তা সত্ত্বেও বিভাগে ফিরতে না পেরে গত চার দিন থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন এই শিক্ষক। এই প্রতিবাদের অংশ হিসেবেই এবার সিঁড়িতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ