তিন গণমাধ্যমকে ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘন্টা সময় দিলেন নুর

নিউজ টুয়েন্টিফোর, ডিবিসি টেলিভিশন ও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর নিউজ টুয়েন্টিফোর ও ডিবিসি চ্যানেলে আমার কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপের খন্ডিতাংশ বিকৃতভাবে প্রচার করে ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেয়। যা আমার সম্মানহানি ও জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। অডিওটির প্রথম অংশের কথোপকথন ছিল আমার খালা ও আমার পরিচিত এক ভাইয়ের সাথে। যেখানে আমার খালার কনস্ট্রাকশান ফার্মের ১৩ কোটি টাকার একটি কাজের ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে ভাইয়ের সাথে আমি আলোচনা করেছিলাম। যা একান্তই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়।

কিন্তু নিউজ টুয়েন্টিফোর ও ডিবিসি চ্যানেলে কথোপকথনটির বিভিন্ন খন্ডিতাংশ বিকৃতভাবে প্রচার করে এবং আমি জনৈক প্রকল্প কর্মকর্তার কাছে ১৩ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের তদবির করি, এই মর্মে খবর প্রচার করে। একইভাবে বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইনেও একই সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে সেখানে আমি কোন প্রকল্প কর্মকর্তার সাথে কোন কথা বলা কিংবা কোন তদবির করিনি। অডিও ক্লিপটির দ্বিতীয় অংশে অন্য ব্যক্তির সাথে কথোপকথন নিয়ে নিউজ টুয়েন্টিফোর ও ‘বাংলাদেশ প্রতিদিনে’ বলা হয়েছে- আমি প্রবাসী কোন এক ব্যক্তির কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি এবং ডিবিসি চ্যানেলে প্রচার করা হয়েছে - টেক্সাস প্রবাসী বিএনপি নেতার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটি ছিল, জনৈক প্রবাসী ব্যক্তি ফোন করে আমাকে সহযোগিতার কথা বললেও আমি তা নাকচ করে দেই। পুরো ফোনালাপটি শুনলেও আমার কথার সত্যতা পাওয়া যাবে।

নুর বলেন, খুবই আশ্চর্যের বিষয়, উক্ত ঘটনা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করার ক্ষেত্রে ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে, আমার কোন বক্তব্য না নিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ-এর ইমেজ ক্ষুন্ন করার জন্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য বিকৃত করে এমন সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে গণমাধ্যমে প্রচার সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় আইনবিরোধী।

তাছাড়া এভাবে তথ্য বিকৃত করে সংবাদ পরিবেশেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্পষ্ট অপরাধ। তাই তথ্য-বিকৃত করে ভুল সংবাদ পরিবেশেন করায় নিউজ টুয়েন্টিফোর, ডিবিসি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে দায়িত্বশীল গণমাধ্যম হিসেবে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে খবর প্রচার ও প্রকাশের আহ্বান জানাই। অন্যথা, ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে নিউজ টোয়েন্টিফোর, ডিবিসি ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন বর্জনসহ আইনী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।

প্রসঙ্গত, গতকাল 'মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ' নামক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের একটি সংগঠন আমার পদত্যাগ দাবি করে, কক্ষে তালা লাগায়। যার আহ্বায়ক আওয়ামীপন্থী নীল দলের বিতর্কিত শিক্ষক নেতা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অা.ক.ম জামাল উদ্দিন। একই সাথে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয়ও একই দাবি করেন। ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে অামি মনে করি যে, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা।  আমাকে ও আমার সংগঠন তারুণ্যের স্পন্দন 'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ'কে বিতর্কিত করে তুলে ধরতেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এমন হীন চক্রান্তের আয়োজন করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ