ভুল চিকিৎসায় দিয়ার মৃত্যু, চিকিৎসকের শাস্তি দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের

  © টিডিসি ফটো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় স্কুল শিক্ষিকা নওশীন দিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষিকা নওশীন দিয়ার ফুফা, তার ছোট বোন সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী ময়ুর তালুকদার, রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান তন্বীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

নওশীন দিয়া ব্রাহ্মনবাড়িয়ার ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্ডেনে শিক্ষকতা করতেন। মাত্র ৬দিন বয়সের বাচ্চার মা ছিলেন তিনি। অসুস্থতার জন্য খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা দেয়। ফলে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।

তবে ডাক্তাররা সে অভিযোগ অস্বীকার করে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। ঢাকায় ডাক্তাররা জানায়, অনেক আগেই নওশীন দিয়ার মৃত্যু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই হাসপাতালে গত দুই বছরে প্রসূতি সমস্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন দশজন মা।

নওশীন দিয়ার ফুফা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আর কোন মায়েদের যেন মৃত্যু না হয়। বাচ্চার বয়স ১ মাসও হয়নি এখন। এই বাচ্চার কষ্টের ভাগ কে নেবে? খুনিদের অতি দ্রুত বিচার চাই।’

নওশীন দিয়ার ছোটবোন ময়ুর তালুকদার বলেন, ‘আমার বোনের মেয়েটা জন্মের পর থেকেই মায়ের কোল হারিয়েছে। এমন পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’

রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান তন্বী শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘এরকম চিকিৎসকদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। যদি তাদের শাস্তি হয় তবেই ভুল চিকিৎসা কমবে। এই তিনজন চিকিৎসকের শাস্তির মাধ্যমে অন্য ডাক্তাররা সাবধান হবে।’

সমাজবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জসীমউদ্দিন বলেন, ‘ডিউক, অবিনেশ্বর চৌধুরী, শাহাদাৎ হোসেন রাসেল এই তিনজনের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে আমাদের বোনের। তাদের ফাঁসি চাই।’

এসময় তারা কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হল- এরকম ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জন্য তিন ডাক্তারের ফাঁসি চাই, হাসপাতালটিতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে ভুল চিকিৎসায়। সেজন্য দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

এসময় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে ব্যাবসায় পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে সমাজবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুপ্তীয় সাহা বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে, কিন্তু জীবনের দাম বাড়ছেনা। আর কয়টা লাশ পড়লে ঘুম ভাঙবে? এরকম আর কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য সবার শাস্তির দাবি করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ