ক ইউনিটের ৫৩১৭ উত্তরপত্র বাতিল, পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ক’ ইউনিটের ৫ হাজার ৩১৭টি উত্তরপত্র বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেকোনো সময়ের চেয়ে এ বছরই এতো বিশাল সংখ্যক উত্তরপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে জানা যায়। ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত হলেও এ উত্তরপত্রগুলো আর নতুন করে বিবেচনার সুযোগ নেই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

রবিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি ক্যম্পাসকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন ঢাবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ক ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ চৌধুরী বলেন, চার সমস্যার কারণে এ উত্তরপত্রগুলো বাতিল করা হয়েছে। 

এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করে ভিসি অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, এবছর ‘ক’ ইউনিটে সমন্বিতভাবে পাসের হার মোট পরীক্ষার্থীর ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী অংশে (এমসিকিউ) পাস করেছেন ২৫ হাজার ৯২৭ জন। আর বহু নির্বাচনী ও লিখিত অংশে সমন্বিতভাবে পাশ করেছেন ১১ হাজার ২০৭ পরীক্ষার্থী। এবছর এক হাজার ৭৯৫ টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ৮৮ হাজার ৯৯৬ শিক্ষার্থী। তন্মধ্যে ৮৫ হাজার ৮৭৯ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার শর্ত লঙ্ঘন করায় ৫ হাজার ৩১৭টি উত্তরপত্র বাতিল করা হয়।

এর আগে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবেকদের বিপুল অভিযাগের ভিত্তিতে করা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রতিবেদনের পরে সন্ধ্যায় ফলাফল স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

৫ হাজার ৩১৭টি উত্তরপত্র বাতিলের বিষয় জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৪ কারণে ওই শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্রগুলো বাতিল করা হয়েছে। এ কারণগুলো হলো- এমসিকিউ প্রশ্নে অধিক অংশের উত্তর প্রদান, অননুমোদিত অংশের উত্তর প্রদান, লিখিত প্রশ্নের অধিক অংশের উত্তর প্রদান এবং অননুমোদিত অংশের উত্তর প্রদান করা।

তিনি আরো বলেন, এবার অনেকগুলো বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্নপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা মোট আসনের পাঁচ গুণ উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার কথা বললেও প্রায় সাতগুণ বেশি উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে।

ফলাফল স্থগিতের পরে তাদের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হবে কিনা জানতে চাইলে ডিন বলেন, না। কারণ তারা আমাদের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। সেগুলো আর বিবেচনায় আনার সুযোগ নেই। তবে সফট্‌ওয়ারের ত্রুটির কারণে যাদের ফলাফল ভুল আসছে তারা নতুন করে মেধাতালিকায় যুক্ত হবেন। এক্ষেত্রে তালিকায় নাম আসা কারো 

ভর্তি পরীক্ষার নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রার্থীকে পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নসহ ৪টি অংশের উত্তর দিতে হবে। এ বিষয়ে অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ বলেন, অনেক শিক্ষার্থী ৪টির বেশি অংশের উত্তর দিয়েছে। আবার অনেকে অননুমোদিত অংশের উত্তর দিয়েছে তাদেরগুলোও বাতিল করা হয়েছে। অনেকে যারা এমসিকিউতে পাস করেনি তাদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়নি। এছাড়া যারা বাধ্যতামূলক অংশের উত্তর দেয়নি তাদেরটাও বাতিল করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১২০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৭৫ নম্বরের বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) এবং ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। ৯০ মিনিটের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৫০ মিনিট ও লিখিত পরীক্ষার জন্য সময় ছিল ৪০ মিনিট। প্রতিটি এমসিকিউ-এর জন্য ১.২৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা গেছে ০.২৫ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে হলে প্রার্থীকে এমসিকিউ অংশে ৩০ ও লিখিত অংশে ১২ নম্বরসহ মোট ৪৮ নম্বর পেতে হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিকভাবেও পরীক্ষার্থীদের পাস করতে হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ