যুগলরাও পিছিয়ে নেই ঢাবির জোবাইকে

  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চালু হওয়া ‘জোবাইক’ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধনের পরপরই তা ক্যাম্পাসে সাড়া ফেলেছে। ডাকসুর উদ্যোগে চালু হওয়া এ বাইসাইকেল সেবা নিতে এগিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের এ জোবাইক চালনার উৎসবে নতুন মাত্রা এনেছে যুগলরা। তাদের জোবাইক চালানো-সেখানো নিয়ে সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক।

বুধবার জোবাইক সেবা চালুর পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার দেখা গেছে সে আগ্রহের চূড়ান্ত প্রতিফলন।

ক্যাম্পাসে জোবাইকে আরোহণ করছেন অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে যুগলদের সাইকেল চালানো প্রশিক্ষণের দৃশ্য। কলাভবন, মলচত্ত্বর (মালরো চত্ত্বর), শ্যাডো টিএসসি এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। সেখানে নিজের বন্ধু-বান্ধবী-প্রেমিকাকেও বাইক চালানো শেখাচ্ছেন তারা। তাদের মাঝে বিপুল আগ্রহ যেন বলে দিচ্ছে- পারলে জীবনের বাকি পথটুকু চলারও প্রশিক্ষণ দিয়ে দিতাম।

সরেজমিন দেখা দেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মালরো চত্ত্বরে দুই জন ধরে এক ছাত্রীকে সাইকেল চালানো শিখাচ্ছেন। একটু এগিয়ে গিয়ে মাস্টার’দা সূর্য সেন হল সংলগ্ন রাস্তায় যুগলের একজনকে চালানো শিখাচ্ছেন অন্যজন। কলাভবনের সামনেও দেখা গেছে আরেক যুগলকে। এভাবে টিএসসি, কার্জন হল এলাকাতেও দেখা মেলে যুগলদের। পরম আগ্রহে একজন শেখাচ্ছেন আরেকজন গভীর মনোযোগে তা রপ্ত করার চেষ্টা করছেন।

এদিকে জোবাইক সবার মাঝে সাড়া ফেললেও আলোচনায় উঠে এসেছে এর অপব্যবহার নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসের বাইরে রেখে যাচ্ছেন বাইসাইকেল। বেশ কয়েকটি সাইকেল নষ্ট করে ফেলার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ প্রবণতা রোধ করা না গেলে অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়বে সম্ভাবনাময় এ সেবাটি।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জোবাইকের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অনেক বাইক দখল করে রেখেছেনে। এদের মধ্যে যুগল এবং নতুন যারা চালানো শিখতে চাচ্ছেন এমন শিক্ষার্থীরাই বেশি।

তবে যুগলদের জোবাইক প্রশিক্ষণ নিয়ে সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। যেখানে তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নিজের বান্ধবী-প্রেমিকাকে। এরকম কয়েকটা দৃশ্য দেখা গেছে ক্যাম্পাসের বেশ কিছু স্পটে।

এদিকে, বাইসাইকেল দিয়ে প্রশিক্ষণের কারণে ব্যাহত হচ্ছে অন্যদের সেবা গ্রহণ। এক বাইক দীর্ঘক্ষণ দখলে রাখার মাধ্যমে অন্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন এর সেবাগ্রহণ থেকে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর পরিবহণ সম্পাদক শামস-ই-নোমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাইক শেখার যে আগ্রহ তা ইতিবাচক। আমরা তাদের বাইক চালনা শেখানোর ব্যবস্থা করবো। তবে রাস্তায় সাইকেল চালানো শিখাটা ঝুঁকিপূর্ণ।

সাইকেলের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ এটাকে আমাদের নিজেদের মনে করতে হবে।

প্রসঙ্গত, অনেক প্রতীক্ষার পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০/২৫ বাইসাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনা হয়। এর কয়েকদিন পর থেকেই ‘জোবাইক’ সেবা চালু হলেও বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে জোবাইক ‘ডিইউ চক্কর’। ডাকসুর উদ্যোগে পরিবহন সম্পাদক শামস ই নোমানের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামান একশোটি বাইসাইকেল দিয়ে এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় ডাকসু’র ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানী সহ ডাকসুর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ