১০ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৪২

ছাত্রলীগ শোকর‌্যালি নয়, ভয় দেখাতে শোডাউন দিয়েছে: নুর

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকর‌্যালি বের করেছে ছাত্রলীগ। এই শোকর‌্যালিকে আবরার হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর জন্য ছাত্রলীগ শোডাউন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি করেন তিনি। এসময় আবরারের হত্যাকারীদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নির্যাতন বন্ধের দাবি জানানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক বলেন, যখনই কোন ঘটনা ঘটে সেই ঘটনাকে অন্যদিকে প্রশমিত করার জন্য নানা লোক দেখানো ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিভিন্ন আশ্বাস দেয়া হয় । আবরার হত্যারও বিচার যেন সেদিকে ধাবিত না হয় তার জন্য আমরা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করছি। এই প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হব। আপনারা দেখেছেন গতকাল ভিসি ছাত্রলীগ যুবলীগসহ আবরারের বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে গিয়ে তার ভাইকে আরো আঘাত করেছেন। ভাবিকে লাঞ্ছিত করেছেন। একদিকে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলছেন মা হিসাবে তিনি বিচার করবেন অন্যদিকে আবরারের ভাই, ভাবির উপর আঘাত। এটি আমাদেরকে স্পষ্টভাবে মেসেজ দিচ্ছে আজকে ছাত্রদের আন্দোলনকে থামানোর জন্য নানারকম কথার ফুলঝুরি শোনানো হচ্ছে। আপনারা যদি থেমে যান এ ঘটনায় অন্য ঘটনার মত হয়ে পড়বে।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাস্টার্স শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে হল ছাড়তে হবে। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত তবে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতদিন কেন নেয়নি। আজকে যখন ছাত্র সমাজ আবরারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টনক নড়েছে। ছাত্রসমাজ যখন রাজপথে থাকবে প্রশাসনের তখন টনক নড়বে। সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে শোকর‌্যালি বের করেছে ছাত্রলীগ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকর‌্যালিতে অংশ নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা শহরের অন্যান্য শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

শোকর‌্যালির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত। সারিবদ্ধভাবে নেতাকর্মীরা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করছে। বেলা ১২টায় পদযাত্রাটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয় এরপর সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য হয়ে তারা এখন ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে রোববার স্ট্যাটাস দেন আবরার। ওইদিন রাত ৮টার দিকে আবরারকে তার রুম থেকে ডেকে শেরেবাংলা হলের টর্চার সেল নামে পরিচিত ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।

রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে শেরেবাংলা হলের একতলা ও দ্বিতীয় তলার মাঝামাঝি জায়গায় আবরারকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।