ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিনের কার্যালয় ঘেরাও আজ

আগামীকাল তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনের কার্যালয় ঘেরাও করবে স্বতন্ত্র জোট ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলো এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিলের শেষে এ ঘোষণা দেয় ছাত্রসংগঠনগুলো।

বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুর ভাস্কর্য থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনের কার্যালয় ঘেরাও করবে ছাত্রসংগঠনগুলো। যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের তিন দফা দাবি পূরণ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

তিনটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এগুলো হলো-যারা অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছেন তাদের ছাত্রত্ব ও ডাকসুর পদ বাতিল করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে খালি পদগুলোতে দ্রুত উপনির্বাচন দেওয়া। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ করা।

মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ সাধারণ ছত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, আগামীকাল আমাদেরকে বৃহৎ কর্মসূচি রয়েছে। টিএসসি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনের অফিস ঘেরাও করা হবে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি পূরণ না হয় আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।

তিনি আরো বলেন, আমাদের তিন দফার অন্যতম প্রধান দাবি ছিল এই জালিয়াত এবং অবৈধভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ৩৪ জন ভর্তি হয়েছেন তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করে ডাকসুর পদগুলোতে পুনর্নির্বাচন দিতে হবে এবং এদের সাথে যারা জড়িত ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির পদত্যাগ করতে হবে।

ফারুক বলেন, রোকেয়া হলের প্রভোষ্ট জিনাত হুদা সরাসরি নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। তাই আমরা মনে করি নৈতিক স্খলনের দেয় তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, আপনারা জানেন কিছুদিন পূর্বে ৩৪ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে ৭ জন সেন্ট্রাল ডাকসুতে নির্বাচিত হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি এ নির্বাচনে জালিয়াতি মধ্য দিয়ে ছিল এবং ভর্তি জালিয়াতির মধ্য দিয়ে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান এবং বাণিজ্য অনুষদের ডিন শিবলি রুবায়েত এ দুজন মানুষ জালিয়াতি করে ছাত্রলীগের নেতাদের ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন চিরকুটের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে প্রকাশিত হয়েছে।আমরা মনে করি, এ জালিয়াতির অভিযোগে উপাচার্য আখতারুজ্জামান ও বিজনেস অনুষদের ডিন শিবলি রুবাইয়াতুল ইসলাম কে পদত্যাগ করতে হবে এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত পদত্যাগ করছেন আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। যেহেতু এ নির্বাচনে জালিয়াতির মধ্য দিয়ে হয়েছে তাই আমরা পুননির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

মশাল মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান, বিন ইয়ামিন মোল্লা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, স্বতন্ত্র জোটের অরণি সেমন্তি খান, চয়ন বড়ুয়া সহ অন্যান্য ছাত্র নেতারা।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার একটি জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে, গত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন।

তফসিল ঘোষণার পর ছাত্রলীগ নেতারা উপাচার্যের সই করা চিরকুট ও অনুষদের ডিনের সহায়তায় নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হন তারা।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, ছাত্রলীগের ৩৪ জন নেতার ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন অভিযুক্ত ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম


সর্বশেষ সংবাদ