শোভন-রাব্বানী ডাকসু-সিনেটের প্রতিনিধিত্ব করা কি লজ্জার না?

  © ফাইল ফটো

আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

এর মধ্যে রাব্বানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য। বির্তকিত এ দুইজন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থাকাকে ভালো চোখে দেখছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সমাজের বিশিষ্টজনরা।

তাদের অভিমত, এমন বিতর্কিত ব্যক্তি যদি ডাকসু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে আসীন থাকেন, তাহলে খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সবার নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হতে পারে। শিগগির এ দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।

আবার অনেকের প্রশ্ন, বির্তকিত এ দুইনেতার ডাকসু-সিনেটের প্রতিনিধিত্ব করা কি লজ্জার না?

বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা তার ফেসবুকে লিখেছেন, শোভনের সব গেল। রাব্বানীর ডাকসু জিএস পদ আছে। সেখান থেকেও কি তার অপসারণ প্রয়োজন নয়? কারণ বিষয়টিতো নৈতিকতার। চাঁদাবাজির কারণে ছাত্রলীগের জিএস না থাকলে, ডাকসুর জিএস কি করে থাকে?

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি ও ডাকসুর ভিপি পদপ্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজির তার ফেসবুকে লিখেছেন, আম, ছালা, আঁটি সবই গেলো তাদের। তো এমন দুর্নীতিবাজ নেতা ডাকসুর জিএস হিসেবে থাকা কি লজ্জার না?

আরমানুল হক নামে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে বলেন, একজন চাঁদাবাজকে সাধারণ ছাত্ররা কখনো আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে মানতে পারিনা। রাব্বানীর পদত্যাগের পাশাপাশি শোভনকেও বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

শাহ জাহান তানিম নামে প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ঢাবি শিক্ষার্থীদের এবং দেশের মানুষের কাছে একটি আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা। এমন একটি জায়গায় যারা নেতৃত্ব দিবেন তাদেরকে অবশ্যই ক্লিন ইমেজের অধিকারী হওয়া বাঞ্ছনীয়। জিএস রাব্বানী ভাই যেখানে চাঁদাবাজির অভিযোগে নিজ দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন সেখানে ডাকসুর মতো একটি জায়গা থেকে পদত্যাগ না করাটা ঢাবি শিক্ষার্থীদের এবং সমগ্র জাতির জন্যই এটা একটা লজ্জাজনক ব্যাপার। ডাকসুর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিকে নজর রেখে রাব্বানী ভাইয়ের পদত্যাগ এখন সময়ের দাবি।'

এ ব্যাপারে ঢাবি উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এটা তাদের সাংগঠনিক ব্যাপার। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু করার নেই। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কোনো নালিশ থাকলে আমাদের কাছে জমা দিয়ে যেতে বলবেন।

অন্যদিকে, এ ব্যাপারে জানতে গোলাম রাব্বানী ও রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ