বশেমুরবিপ্রবিতে সাংবাদিক বহিষ্কারে ডুজার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

  © ফাইল ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির ও সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধানে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই সাংবাদিকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন। অন্যথায় নেতৃবৃন্দ সারাদেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন। ডুজা নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ক্যাম্পাস জার্নালিস্ট’স ফেডারেশন’র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে এই আল্টিমেটাম দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়- গত ২২ আগস্ট প্রতিবেদন তৈরির জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বক্তব্য নিতে তার কার্যালয়ে যান ‘ডেইলি সান’ পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিবেদক ফাতেমা তুজ জিনিয়া। এসময় উপাচার্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যা চান। কর্তব্যরত সাংবাদিক স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যা দেন কিন্তু উপাচার্য তাকে হুমকি-ধামকি দেন ও অশোভন আচরণ করেন। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক আদেশে ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশ্বজনীন প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমাজ সচেতন শ্রেণি। বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে তারা কথা বলবেন, লিখবেন এটিই স্বাভাবিক। সে হিসেবে ফাতেমা তুজ জিনিয়া তার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখতেই পারেন। কিন্তু এর জেরে তাকে বহিষ্কার করা চরম হাস্যকর ঘটনা।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোনো স্বৈরাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের বৃত্তে বন্দি থাকে না। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর অধিকার রয়েছে মন খুলে মতামত প্রকাশ করার। বাংলাদেশের সংবিধানেও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশ করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিককে বহিষ্কার করে চরম স্বৈরাতান্ত্রিক মনোভঙ্গির পরিচয় দিয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বশেমুরবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের এমন স্বৈরাচারমূলক মনোবৃত্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়া নিয়ে শিক্ষার্থী বহিষ্কার করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যয়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান। এটি অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কিন্ডারগার্টেন নয়। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থী বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পশ্চাৎপদ ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী বলে প্রমাণ দিয়েছে।

একজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপর এ ধরনের আচরণে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক পরিবারের সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ফাতেমা তুজ জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।


সর্বশেষ সংবাদ