পুলিশ-শিক্ষার্থীর বাগবিতণ্ডায় উত্তেজনা ঢাবি ক্যাম্পাসে

পথচারী এক ছেলেকে লাথি মারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের কিছু শিক্ষার্থী বহিরাগত এক ব্যক্তির গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এছাড়া ওই গাড়ির মালিক ও নিউমার্কেট থানা পুলিশ সদস্যেদের সঙ্গেও বাক-বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের। গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো গ- ২০১০৪৫।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের সামনে আজিমপুর কলোনির একটি কবরস্থানের গেইটে এই ঘটনা ঘটে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের অনুমতিক্রমে নিউমার্কেট থানা পুলিশকে ভাঙা গাড়িটি থানায় নিয়ে যেতে দেখা যায়। লাথি খাওয়া ওই ছেলের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সে কলোনির টোকাই হতে পারে বলে উপস্থিত জনতা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বহিরাগত এক ব্যক্তি তার আত্মীয়ের লাশের সঙ্গে শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের সামনের আজিমপুর কলোনির কবরস্থানে আসে। তার প্রাইভেটকার কবরস্থানের গেটের সামনে পার্কিং করে রাখে। এসময় এক ছেলে সেখানে গাড়ি রাখতে তাকে নিষেধ করে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার মাঝে গাড়ির মালিক ছেলেকে লাথি মারে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের ছাত্ররা গিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিউমার্কেট থানা পুলিশ এলে ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশেরও বাগবিতণ্ডা হয়। এতে ওই গাড়ি আরও ভাংচুর করে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্রবাসের সহকারী আবাসিক শিক্ষক (ওয়ার্ড ইন চার্জ) মো. আখতারুজ্জামান (সিনবাদ) ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় বিষয়টির মীমাংসা হয়।

ঘটনায় জড়িত শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা জানান, 'একটি কার কলোনির কবরস্থানের গেইটের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখে। এতে কবরস্থানের ভেতরে থাকা একটি ছেলে বাইরে আসতে না পারায় গাড়ির চালককে গাড়ি সরাতে বলে। তখন মালিক ক্ষেপে গিয়ে ছেলেটি দুটি লাথি মারে। এই ঘটনা দেখে শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের কিছু শিক্ষার্থীরা মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সে কোনো জবাব না দিয়ে নিউমার্কেট থানা পুলিশকে কল দিলে পুলিশ এসে ছেলেটিকে তুলে নিতে চায়। তখন পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও বাক বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এক ছাত্রের জামার কলার চেপে ধরে বলে অভিযোগ করেন উক্ত শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ছাত্রাবাসের সহকারী আবাসিক শিক্ষক মো. আখতারুজ্জামান (সিনবাদ)। তিনি বলেন, 'আমাকে শিক্ষার্থীরা পৌনে দশটার দিকে কল দেয়। আমি ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেই।'

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, 'এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে পথচারী ও গাড়ি চালকের মধ্যে। পরে কিছু শিক্ষার্থী গিয়ে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।'

তবে নিউমার্কেট থানা পুলিশের সদস্য ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো হাতাহাতি বা বাক বিতণ্ডার ঘটনা অস্বীকার করেন তিনি। ভাঙ্গা গাড়ির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের থানা পুলিশ গাড়িটি থানায় নিয়ে আসবে।

ঘটনার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ওখানে গাড়ি রাখা নিয়ে একটা বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে যায়। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিমাংসা করেছি। বহিরাগতদের জন্যই ঘটনার সূত্রপাত।


সর্বশেষ সংবাদ