ইশা ছাত্র আন্দোলন

কাশ্মীরের স্বাধীনতায় সব ধরণের সহযোগিতা করার ঘোষণা

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহবান

কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য সাধ্যানুযায়ী সহযোগীতা করার জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা করেছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ। ভারতের বিজেপি সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে বুধবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও সমাবেশ করে সংগঠনটি।  

শেখ ফজলুল করীম মারুফ বলেন, ‘কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে কোন মুসলমান নিশ্চুপ থাকতে পারে না। সে পৃথিবীর যে প্রান্তের অধিবাসীই হোক না কেন। পরাধীনতার যে কি যাতনা, তা আমরা জানি। আগ্রাসী শক্তির অত্যাচারের বেদনা আমরা বুঝি। ‘৭১ পূর্ব হানাদার বাহিনী কর্তৃক হত্যা, ধর্ষণের শিকার আমরা হয়েছি। সেখান থেকেই আমরা পৃথিবীর সকল নিপীড়ন-নিষ্পেসণের বিরোধিতা করি। ‘৭১এর চেতনাই আমাদেরকে কাশ্মিরিদের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে। সেই চেতনা থেকেই আমরা কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে রাজপথে বিক্ষোভ করছি।’

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকের বিক্ষোভ থেকে কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য সাধ্যানুযায়ী সহযোগীতা করার জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা করছি। পাশাপাশি ভারতের মোদি সরকারের এহেন অসাংবিধানিক হটকারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সকল ধরণের পণ্য বর্জন করার জন্য দেশের সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহবান জানাই।

ইশা ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এম হাছিবুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, কেন্দ্রীয় কলেজ সম্পাদক এম এম শোয়াইব, কেন্দ্রীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ মাহমুদুল হাসান সহ ঢাবি নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এম হাছিবুল ইসলাম বলেন, ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হয় তখন বৃটিশ সরকার নিয়ম করে দিয়েছিল কাশ্মীর একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র, এখানকার জনগণ সর্বদিক থেকে স্বাধীন। এমনকি এখানে কেউ জমিজমা ক্রয়, বহিরাগতরা নাগরিকত্বও নিতে পারবে না। কিন্তু মোদি সরকার ৩৭০ ধারা পরিবর্তন করে নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ভারতের সংবিধানের ২-এর ক-খ ধারায় উল্লেখ আছে, কোন দেশকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে নিতে হলে প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্স জারি করবে, এবং কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিবে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তাদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

বক্তারা বলেন, কাশ্মীর সঙ্কট শুধু কাশ্মীরেরই নয়, এ সঙ্কট বাংলাদেশেরও। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিবাদমুখর হতে হবে। তিনি বলেন, পাকিস্তানীরা যেভাবে আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, অনুরূপভাবে কাশ্মীরীদের অধিকারও মোদি সরকার কেড়ে নিয়েছে। সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ এমনকি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে কাশ্মীরের মুসলিম রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার, গৃহবন্দি, সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্পট প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।


সর্বশেষ সংবাদ