ডেঙ্গু আতঙ্কে ছুটির আগেই হল ছাড়ছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

প্রতীকী
প্রতীকী

রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গুর‌ প্রকোপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এবারের ডেঙ্গু ভয়াবহতা অতীতের সব ইতিহাসের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গত ক'দিন আগে ফিরোজ নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। চলমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ঈদের ছুটির আগেই ক্যাম্পাস ছাড়তে দেখা গেছে আতঙ্কিত বেশকিছু শিক্ষার্থীকে।

শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না করে ক্লাস-পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছেন। যে কারণে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েও অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস করতে বাধ্য হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ক্লাস না করলে সেমিস্টার পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। যে কারণে তারা ডেঙ্গু নিয়ে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যদি হলে ডেঙ্গু হয় তাহলে সেবা-শুশ্রূষা করার মতো কেউ নেই। অসুস্থ শরীর নিয়ে ডেঙ্গু অবস্থায় হলে থাকা যাবে না অন্যদিকে অসুস্থ শরীর নিয়ে ডেঙ্গু অবস্থায় বাড়িতে যেতে কষ্ট হবে। তাছাড়া সামনে ঈদ-উল-আযহা। অসুস্থ শরীর নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঈদের আনন্দ উপভোগ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে চান না। তাই নিজেকে সুস্থ রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির আগেই বাড়ি ফিরেছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল প্রশাসন শুধুমাত্র কয়েকটি হল পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও হলে মশা নিধন কীটনাশক ছিটিয়ে শেষ করেছেন, বাকি অধিকাংশ হলের কোন খোঁজখবর নেই। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি হল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যে কারণে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ বিরাজ করছে বিষয়টি নিয়ে।

ঈদের ছুটির আগেই বাড়িতে যাওয়ার শিক্ষার্থী খাইরুল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ভেবেছিলাম ঈদে বাড়িতে যাব ৯-১০ তারিখের দিকে। আমার এখনো ডেঙ্গু হয়নি। কিন্তু আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকে ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। যে কারণে ভয় পাচ্ছি যদি আমারও ডেঙ্গু হয়। তাই আজ বাড়ি চলে যাচ্ছি।

গতকাল বাড়ি চলে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক মুঠোফোনে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, হল প্রশাসন ডেঙ্গু নিধনে‌ অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে আমি মনে করি সাধারণ শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট নন। তাদের মধ্যে আমিও একজন। তাই ডেঙ্গু হবার ভয়ে আমিও বাড়ি চলে এসেছি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে বিষয়টির সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। ডেঙ্গু নিরসন করার জন্য আমরা নতুন নতুন জিনিস সহযোজন করেছি আমাদের মেডিকেলে। অনেক শিক্ষার্থী এতে সন্তুষ্ট রয়েছে। আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের তো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের ছেলে মেয়ের মত। মশা নিধনে যা যা করা দরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে আমরা চেষ্টা করতেছি।


সর্বশেষ সংবাদ