৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল দাবিতে বিক্ষোভে অচল ঢাবি

  © টিডিসি ফটো

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে ক্লাস হচ্ছে না। এছাড়া সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

এর আগে আজ সকালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর, রোকেয়া হলের সামনের সড়ক, শাহবাগসহ বিভিন্ন মোড়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এতে ওইসব সড়ক দিয়ে সব ধরণের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মোফাজ্জল সাদাত বলেন, ‘আমাদের মূল দাবি হচ্ছে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চাই। যেখানে ঢাবি শিক্ষার্থীদের দেখভাল করতে পারে না সেখানে আরও দুই লাখ শিক্ষার্থীর দায়িত্ব কিভাবে নেয়?’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী আশোফা তাসনিফ বলেন, ‘আমরা এতো কষ্ট করে ঢাবিতে চান্স পেয়েছি। কিন্তু আমাদের সমস্যার শেষ নেই। অথচ ক্ষনিকা বাস এবং চৈতালি বাসে বোনকে যে হয়রানি করা হয়েছে, আমরা তার বিচার চাই। সাত কলেজের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক বাজে মন্তব্য করছে আমরা এর বিচার চাই।’

এসময় অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ‘শোন বোন শোন ভাই, ঢাবির কোন শাখা নাই’, ‘ঢাবির বাস আটকা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আশ্বাস বা প্রতারণা, চলবে না চলবে না’, ‘সাত কলেজের ঠিকানা, ঢাবি হবে না’, ‘রাখতে ঢাবির সম্মান, সাত কলেজ বেমানান’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়  আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

এর আগে গতকাল বুধবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। পরে দুপুর ২টার দিকে অবস্থান থেকে সরে গেলে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে জমায়েত হতে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে টিএসসি ও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। ফলে রাজধানীর এই ব্যস্ততম এলাকা জুড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

অধিভুক্তি বাতিলসহ দাবিসমূহ হলো- চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই অধিভুক্ত সাত কলেজ বাতিল করা; দুই মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া; বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করা এবং ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা।

আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ‘সাত কলেজ বাতিল চাই’ কমিটির মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বলেন, ‘আমরা আমাদের চারটি দাবি নিয়ে এর আগে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি মানে নাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’

কমিটির আহবায়ক ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো: আকাশ হোসেন আবিদ বলেন, ‘অধিভুক্ত সাত কলেজের কারনে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় সংকট এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে এর থেকে পরিত্রাণ চাই।’

পরে তারা টিএসসি চত্বর অবরোধ করে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে ভোগান্তিতে পরে পথচারীরা। এসময় পাশেই অবস্থিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা বিপাকে পড়েন।


সর্বশেষ সংবাদ