আখতারের কর্মশালা, পণ্ডর পেছনে দায়ী ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলে ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অন সাইবার সেফটি অ্যান্ড ৯৯৯’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী কর্মশালাটি স্থগিত রয়েছে। যদি এ কর্মশালাটি পণ্ড হয়ে যায় (ভেস্তে যায়) তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এজিএস সাদ্দাম হোসেনের ‘অসহযোগিতাই’ দায়ী থাকবে। এমনটাই অভিযোগ করছেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের উদ্যোগের মেয়েদের হলে সপ্তাহব্যাপী এ কর্মশালা মঙ্গলবার হতে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত‍ চলার কথা ছিলো। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে এই কর্মশালাটি ছিলো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এসে অদৃশ্য কারণে সেটি পণ্ড হয়ে গেছে। অন্যান্য হলগুলোতে এ কর্মসূচিটা স্থগিত রয়েছে।

বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ডাকসুর সেমিনার কক্ষে বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আখতার। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের জিএস সাগুফতা বুশরা মিশমা, এজিএস মুন্নি আক্তার, শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি প্রমুখ।

আখতার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, এই কর্মশালা আয়োজনে সবাইকে পূর্ব থেকে অবহিত করা ও জিএস থেকে সাইন নিয়ে বাজেট পাশ করানো হলেও শেষ মুহুর্তে এসে আমাকে প্রোগ্রাম করতে দেয়া হচ্ছে না। হল প্রশাসন থেকে আমাদের বলা হচ্ছে ডাকসুর সবার সাথে সমন্বয় করা না হলে প্রোগ্রাম করা যাবে না। আমি এর আগে প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা নিয়ে একটা সংবাদ সম্মেলন করি সেখানে এজিএসের সম্মতি ছিলো এবং তিনি এতে যোগ দিবেনও বলেছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে তিনি সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি।

তিনি বলেন, এখন আমি যখন সব আয়োজন সম্পন্ন করেছি, হল সংসদ ও বিভিন্ন হল প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আমরা যেখানে অনেক পরিশ্রম করে সবকিছু গুছিয়ে এনেছি তখন কোন এক অদৃশ্য কারণে আমাকে প্রোগ্রামটি করতে দেয়া হচ্ছে না। এজিএস সাদ্দাম হোসেনকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে জানালেন, মেয়েদের হলে অনেক ব্পাোর আছে তাই ওখানে প্রোগ্রাম করা যাবে না।

আখতার অভিযোগ করেন, সপ্তাহব্যাপী এই কর্মশালাটি যদি ভেস্তে যায় তাহলে এজিএসের অসহযোগিতার কারণেই ভেস্তে যাবে। আমরা চাইনা ডাকসুর কোন প্রোগ্রাম বানচাল হোক। আমি এখনও প্রোগ্রাম বাতিল করিনি, স্থগিত রেখেছি। আমরা এটা করতে চাই।

বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের জিএস সাগুফতা বুশরা মিশমা বলেন, অনলাইনে হেরেজমেন্ট থেকে বাঁচার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এটা একটা জরুরি ও সময়োপযোগী কর্মসূচি ছিলো। এতে অংশগ্রহণের জন্য মেয়েদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ ছিলো। কোন একটি ইশারায় প্রোগ্রামটি করতে দেয়া হয়নি। ব্যপারটি শুধু আখেতারের জন্য না আমাদের জন্যও লজ্জাকর।

তিনি আরও বলেন, আমরা হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি। হল সংসদ কেন অন্যদের কথা শুনবে, বা অন্য একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। তাহলে আজ ডাকসু কাদের জন্য কাজ করবে, কাদের কথায় কাজ করবে প্রশ্ন রইল। আমরা সকলের কল্যাণের জন্য এ প্রোগ্রামটি আবার করতে চাই ।

শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, যারা অনলাইনে মেয়েদের হেরেজমেন্ট করে তারাই এটি করতে দেয়নি। কারণ তারা জানে মেয়েরা সচেতন হয়ে গেলে তারা আর হেরেজমেন্ট করতে পারবে না। তারা কারা আপনারা সবাই জানেন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এটি করতে দেয়া হচ্ছে না। কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে আমি এবং আমার হলের প্রত্যেকটি মেয়ে অনলাইনে হেরেজমেন্ট এর স্বীকার হয়েছি। আমি খুন থেকে শুরু করে ধর্ষণ-সব হুমকি পেয়েছি। একটি দল শুধুমাত্র হেরেজমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে দাড়িয়ে আছে। তাদের কাজ হচ্ছে শুধু বানচাল করা। এর আগে তারা পহেলা বৈশাখের প্রোগ্রাম বানচাল করেছে। তারা ‘গুজবে কান দিবেন না’ নামক ফেসবুক গ্রুপ থেকে মেয়েদের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে।

ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এই প্রোগ্রামের আয়োজকদের (৯৯৯) বলে দেয়া হয়েছে এখানে জিএস এজিএসের কনসার্ন নাই তাই এটা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে জিএসের সাথে কথা বললে তিনি বারবার বিষয়টা নিয়ে এজিএসের সাথে কথা বলতে বলেছে। তাহলে তাদের জন্যই বিষয়টি করতে দেয়া হচ্ছে না। আজকে প্রশাসন ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তারা যেভাবে বলছে প্রশাসনও সেভাবেই কাজ করছে।


সর্বশেষ সংবাদ