সুশাসনের অভাবেই মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছে না

সুশাসনের অভাবেই মেধাবীরা আজ চাকরি পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, প্রাথমিকসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। তাই বারবার আমরা এই দৃশ্য দেখছি। এছাড়া দেশে সুশাসনের অভাবেই মেধাবীরা আজ চাকরি পাচ্ছে না।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে এবং পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন,  প্রশ্নফাঁস নিয়ে এটাই আমাদের প্রথম কিংবা নতুন আন্দোলন নয়, আমাদের আগেও অনেক ছাত্রসংগঠন এই প্রতিবাদ করেছে।

এদিকে শনিবার বেলা পৌনে ১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কোটা আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, কিছু দিন আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন করলো কিছু ছাত্র-ছাত্রী। তারা আসলে জানেই না, সরকার যে পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে, তা আদৌ সীমিত না। এখন প্রতিবছর প্রচুর সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এরা আসলে বুঝতে পারেনি। তারা মনে করছিলো, কোটা সংস্কার করলেই চাকরি পাবে।

তিনি আরো বলেন, কোটা যদি না থাকে, আন্দোলনকারীদের একজনও চাকরি পাবে না, এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। বর্তমান সরকার যেভাবে চলছে, ৫ বছর পর সেভাবে চলবে না। এখন যারা চাকরিতে প্রবেশ করবেন, তাদের ডিজিটালাইজড মনমানসিকতায় ও দক্ষ হয়েই প্রবেশ করতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি না জানলে চাকরি হবে না।

আগেও প্রশ্নফাঁস বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদের নেতারদের উপর হামলার বিষয় তুলে ধরে আজ রোববার নুর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নফাঁস নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা সরকারি ছাত্রসংগঠনের হামলার শিকার হয়েছি। যেই প্রশ্নফাসঁ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে এবং বিতর্কিত পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নতুন পরীক্ষা দিয়েছে। এসময় তিনি সরকারি সকল নিয়োগে পিয়ন থেকে ফাস্ট ক্লাস পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে ক্ষমতসীনদের লোকদের কাছে জিম্মি বলেও মন্তব্য করেন।

নুরুলহক তার বক্তব্যে সরকারি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রতি অতিদ্রুত প্রশ্নফাঁস নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।

মানববন্ধনের বিষয়ে সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন জানান, আজকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এখানে একত্রিত হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছিল তাদের অুনরোধে। রাশেদ বলেন যেখান থেকে, যাদের কাছ থেকে আমাদের ছোট শিশুরা নীতি-নৈতিকতা শিখবে সেখানেই প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে যোগ্য মেধাবীদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটা সরকারি চাকরি কিংবা নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস, অনিয়মের কথা তুলে ধরে এসবের সুষ্ঠু প্রতিকার চেয়েছেন রাশেদ।

সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনিয়ম, অন্যায় আর দুর্নীতিতে ভরে গেছে। যার কারণে মানুষ এসব অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি বলেন, এজন্য এদেশে কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্য, প্রশ্নফাঁস কিংবা ঘুষ-দুর্নীতির মতো অসংগতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে হয়।

এছাড়া মানববন্ধনে সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক মো. আতাউল্লাহ, মশিউর রহমান এবং এপিএম সোহেলসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী বক্তব্য রাখেন।

 


সর্বশেষ সংবাদ