বিতর্কের বিশ্বকাপে যেভাবে চ্যাম্পিয়ন হলেন ব্র্যাকের সৌরদ্বীপ-সাজিদ

সৌরদ্বীপ পাল এবং সাজিদ খন্দকার
সৌরদ্বীপ পাল এবং সাজিদ খন্দকার  © সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো ‘ডিবেটিং ওয়ার্ল্ড কাপ’ বা বিতর্কের বিশ্বকাপ খ্যাত বেলগ্রেড ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে এ অর্জনের সাক্ষী হলো সৌরদ্বীপ পাল এবং সাজিদ খন্দকারের ‘ব্র্যাক এ’ নামক দলটি। 

ফাইনালে ওঠার আগে ‘ব্র্যাক এ’ ওপেন ক্যাটাগরিতে ৫ম স্থান অর্জন করে যা বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডও ছিল সাজিদ-সৌরদ্বীপের।

টুর্নামেন্টের ২য় সেরা ইএসএল (ইংরেজি যাদের দ্বিতীয় ভাষা) বক্তার খেতাব জেতেন সাজিদ; সৌরদ্বীপ জেতেন ৬ষ্ঠ বক্তার খেতাব। টুর্নামেন্টের দশম সেরা ওপেন স্পিকারও ছিলেন সাজিদ।

ফাইনালে তারা মুখোমুখি হন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর ও এটেনো দে ম্যানিলা ইউনিভার্সিটির সঙ্গে। বিতর্কটি লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে বেলগ্রেড ডব্লিউডিসির ফেসবুক পেজে দেখানো হয়। মার্কিন ডলারের উপর বিশ্বব্যাপী নির্ভরতা হ্রাস করার বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয়।

সৌরদীপ পাল বলেন, ‘ফেসবুকের লাইভ ভিডিওতেই জানানো হয় যে আমাদের স্বীকৃতিপত্র দেয়া হবে। সামনাসামনি হলে হয়তো আমাদের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেয়া হতো। এখন এটা ভার্চুয়ালি হবে।’

কেমন ছিল বিতর্কের সুদীর্ঘ যাত্রা౼এই প্রশ্নের উত্তরে সৌরদীপ বলেন, ‘গত দুই বছরে অনলাইনে বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি হচ্ছে। এর আগে দেশ-বিদেশের অনেক জায়গায় গিয়েছি। এর আগে আমরা বিশ্বকাপের জন্য মেক্সিকো, থাইল্যান্ড ও সাউথ আফ্রিকায় গিয়েছি। আমরা অনেক দিন ধরে অনেকবার অংশ নেয়ার পর এটা জিতেছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-তে স্নাতক পড়েছি এবং এখন পড়ছি স্নাতকোত্তর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে আমরা বাদ পড়ি। কোয়ার্টার ফাইনালের পর আর মাত্র দুটি বিতর্ক থাকে। আমরা বেশ কাছে গিয়েও ফিরে এসেছি।’

এর আগে ২০১৩ সালে ব্র্যাকের আরেকটি দল ইংরেজিকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ব্যবহারকারী বিভাগে জিতেছিল। ২০১৫ সালে আইবিএ-র একটি দল নকআউট পর্বে খেলেছে। এসব অর্জন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ব্র্যাক-এ টিমের। 

একদম স্কুলজীবন থেকেই তাদের বিতর্কের শুরু। এরপর  ধীরে ধীরে তারা আরও দৃঢ় অবস্থানে যান। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা জেতার কারণে তারা ইতোমধ্যে অনেক দেশে বিতর্কের বিচারকার্য পরিচালনা করেছেন। শুধু বিচারকার্যই নয়, ট্রেনিং করাতেও অনেক দেশে গিয়েছেন তারা। সব খরচই বিভিন্ন সংস্থা বহন করেছে এবং বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ভাতাও দেয়া হয়েছে।

সাজিদ ও সৌরদীপ এর আগে একসঙ্গে যুক্তরাজ্য, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। এসব দেশে তারা পুরস্কৃত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন এবং সর্বোপরি অর্থনৈতিকভাবেও উপকৃত হয়েছেন।

ব্রিটিশ সংসদীয় পদ্ধতির এই বিতর্কের বিষয় ছিল: ‘এই সংসদ ডলারের ওপর বিশ্বব্যাপী নির্ভরতা হ্রাসকে সমর্থন করে’। ব্র্যাক-এ টিমের সদস্যরা এর বিপক্ষে অর্থাৎ ডলারের সমর্থনে বক্তব্য দেন। উল্লেখ্য, প্রথম বক্তা হিসেবে সাজিদ তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ‘আমরা আজ কোনো নমনীয়তা দেখাব না।’ এরপরই তিনি তার বক্তব্যের বাকি অংশ বলেন। আন্তর্জাতিক পরিসরের বৃহত্তম আয়োজনে সাজিদের এই উচ্চারণ তার দলের বলিষ্ঠ অবস্থানকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে। বিতর্কের মঞ্চে বাংলার এই দুই কৃতী সন্তানের সামনে নাকানিচুবানি খায় অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা প্রতিযোগীরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence