স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি: নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে যান পপি

উম্মে সুলতানা পপি
উম্মে সুলতানা পপি   © সংগৃহীত

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামি উম্মে সুলতানা পপি (ছদ্মনাম শম্পা) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।

এদিকে, আসামি জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদকে একই আদালত আরও তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। জাবেদ হোসেন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, উম্মে সুলতানা পপিকে ১০ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। শুক্রবার তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে দায় স্বীকার করেছেন।

১৬৪ ধারায় পপির জবানবন্দি শেষে আদালত চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় পপি প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তিনিই (পপি) নুসরাতকে ৬ এপ্রিল নিচতলা থেকে ডেকে সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যান। এরপর নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার ঘটনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসব কথা স্বীকার করেন পপি। মঈন উদ্দিন বলেন, আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন পপি। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

এদিকে, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদকে গত ১৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে ওই দিনই আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের আবেদন করা হয়। আদালত ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুক্রবার তাকে আবার আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, নোয়াখালী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাসু দত্ত চাকমা।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত। 


সর্বশেষ সংবাদ