এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা

ছাত্রলীগের ৫জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

বরিশালের গৌরনদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় অধিপত্য বিস্তার ও দলীয় কোন্দলের জেরে সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সানি মোল্লাকে অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম ও হত্যার চেষ্টা করা হয়।গত বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সানিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সানির বাবা আব্দুল মোল্লা বাদি হয়ে ছাত্রলীগের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।  শনিবার রাতে তিনি এই মামলা দায়ের করেন।

চিকিৎসাধীন সানি মোল্লা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে আমার বন্ধু সরকারি গৌরনদী কলেজের একাদশ শ্রেনির ছাত্র ছাত্রলীগ কর্মি রনি ফকির (১৬) আমার বাড়িতে এসে কিছু একটা বলার অযুহাতে আমাকে মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে অপেক্ষামান উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সৈয়দ দিদার, মোঃ রাসেল ফকির দুপুর সোয়া ১টার দিকে জোরপূর্বক আমাকে ১টি মোটর সাইকেলে তুলে মাঝখানে বসিয়ে অপহরণ করে। এরপর আমাকে রামসিদ্ধি গ্রামের নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বসে আমাকে ওইদিন দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রড, ইট, বাঁশ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় কয়েক দফা পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তারা।

এসময় আমি একাধিকবার অজ্ঞান হয়ে পড়ি।পরে জ্ঞান ফিরলে তারা পুনরায় আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে আমার হাত ও পায়ের জোড়ায় জোড়ায় ইট দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। সন্ধ্যার পরে পাশের নির্জন বাগানে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে জবাই করার চেষ্টা করলে আমি আমার শেষ ইচ্ছা মাকে দেখতে চাওয়ার দাবি করি। এ সময় ওরা আমাকে মোটর সাইকেলে করে রাসেল ফকিরের বাড়ি নিয়ে এসে সেখানে মাকে ডেকে আনেন বন্ধু রনি।

আহত সানি মোল্লার মা কহিনুর বেগম অভিযোগ করে বলেন, আহত হওয়ার বিষয়ে রনির কাছে জানতে চাইলে দিদার ও রাসেল আমাকে গালিগালাজ করে বেশী কথা বলতে নিষেধ করেন। এ সময় আমাকে ধমক দিয়ে তারা বলে, তোমার ছেলে তোমাকে দেখাতে চেয়েছে বিধায় নিয়ে এসেছি তোমাকে দেখিয়ে নিয়ে ওকে জবাই করা হবে। বাড়াবাড়ি করলে তোমাকেসহ হত্যা করা হবে। এসময় আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে সানিকে উদ্ধার করেন।  

অন্যদিকে আহত সানি মোল্লার বাবা আবুল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসী রাসেল, দিদারসহ তাদের সহযোগীরা আমাকে বিষয়টি গোপন রাখতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ ঘটনা সাংবাদিক ও পুলিশসহ কাউকে জানালে পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তাই আমরা বিষয়টি ভয়ে গোপন রাখি। কিন্তু সানির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে থানায় জানাই। বর্তমানে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে আতংকে আছি।

ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে সানির বন্ধু সরকারি গৌরনদী কলেজের একাদশ শ্রেনির ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মি মোঃ রনি মোল্লা বলেন, সানি আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু। আমি কথা বলার জন্য ডেকে মোল্লাবাড়ি বাসষ্টান্ডে নিয়ে আসলে দিদার ও রাসেল জোরপূর্বক সানিকে মোটর সাইকেলে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে শুনেছি তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রাসেল ও দিদারের সঙ্গে যোগাযেগের চেষ্টা করে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গৌরনদী মডেল থানার ওসি গোলাম সরোয়ার জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ