ফাহিম সালেহ হত্যাকাণ্ড

অভিযুক্ত টাইরেসের পক্ষে মাঠে বান্ধবী ও আইনজীবী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

  © ফাইল ফটো

নিউইয়র্কে বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ'র হত্যার জট এখনো না খুললেও এই হত্যার দায়ে এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফাহিমের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিলকে। এদিকে এই হত্যাকাণ্ডে ফাহিম সালেহ'র ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিলকে নির্দোষ দাবি করেছেন তাঁর বান্ধবী।

এছাড়া নিউইয়র্কে আইনজীবীদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হ্যাসপিলের পক্ষে মাঠে নেমেছে । তারা এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যক্তিবিশেষের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

আগামী ১৭ আগস্ট আদালতে হাজির করা হবে হ্যাসপিলকে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করা ছাড়া আর কিছুই বলছেন না ডেঁভো। তবে টাইরেস ডেঁভোর কথিত মেয়ে বন্ধু মেরিনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মেরিন নিজের পুরো নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউইয়র্ক ওয়ানের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি নিজেকে ইউরোপ থেকে নিউইয়র্কে আসা শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ২২ বছর বয়সী এই তরুণী দাবি করেন, তিনি টাইরেস ডেঁভোকে ভালো করেই চেনেন। সে অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ এবং মাছিকেও আঘাত করার লোক নয় সে। তারা বিয়ে করার পরিকল্পনাও করেছেন। শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়ায় তিনি নিজের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।

নিউইয়র্ক পুলিশ মেরিনকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে তাঁকে ফাহিম সালেহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়ানোর সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত আইনজীবী এইচ বেঞ্জামিন পেরেজ।

আইনজীবীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দ্য লিগ্যাল এইড সোসাইটি নিউইয়র্ক পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ব্যক্তিবিশেষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা নিউইয়র্ক পুলিশের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। বিচারের আগেই গণমাধ্যমে নানা তথ্য, ভিডিও ফাঁসের ফলে আদালতে প্রমাণ হওয়ার আগেই লোকজনকে অপরাধী মনে করা হচ্ছে। টাইরেস ডেঁভোর বিচার জুরিবোর্ডে যাবে। লিগ্যাল এইড বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী এখনো টাইরেস ডেঁভোকে নির্দোষ বলা হয়।

আইনজীবী স্যাম রবার্টস ও নেভিল মিশেল টাইরেস ডেঁভোর পক্ষে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, এ মামলার তদন্ত এখনো খুবই প্রারম্ভিক অবস্থায়। মামলাটি জটিল ও দীর্ঘ হবে। এ নিয়ে জনগণকে মন খোলা রাখার আহ্বান জানান এসব আইনজীবী।

গত ১৩ জুলাই বেলা ১টা ৪০ মিনিটে ফাহিম যখন ম্যানহাটানে তাঁর ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে ওঠেন, তখন তাঁর পিছু নিয়ে দ্রুত লিফটে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি। তদন্তকারীরা বলছেন, ওই ব্যক্তিই টাইরেস ডেঁভো। তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগে ইলেকট্রিক করাত ছিল বলে তাঁদের ধারণা। লিফটের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ফাহিম ওই ব্যক্তিকে কিছু জিজ্ঞেস করছেন। এরপর দুজনের মধ্যে কিছু কথা বিনিময় হতে দেখা গেছে।

ফাহিম লিফট থেকে ঘরে পা রাখতেই মাস্ক পরিহিত ওই ব্যক্তি ফাহিমকে আক্রমণ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পেছন থেকে টেজার দিয়ে আঘাতের পর ফাহিম লিফট থেকে বের হতেই সামনের দিকে পড়ে যান। এরপর লিফটের দরজা বন্ধ হওয়ায় সিসিটিভির ফুটেজ আর রেকর্ড হয়নি।

এদিকে তদন্তকারীরা মনে করেন, এরপরই টাইরেস ডেঁভো ছুরিকাঘাত করে ফাহিমকে হত্যা করেন। পরে তিনি কার সার্ভিস ডেকে হোম ডিপোয় যান। কার সার্ভিসের সেই পেমেন্ট তিনি পরিশোধ করেন ফাহিমের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। হোম ডিপো থেকে কিছু ক্লিনিং আইটেমও কেনেন টাইরেস ডেঁভো।

 


সর্বশেষ সংবাদ