র্যাব চিৎকার করছে— এই পেয়েছি, ধর ধর: প্রত্যক্ষদর্শী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:২৩ AM , আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:২৩ AM
বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিমকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতারের পর হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় আনা হয়েছে। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
সাহেদকে গ্রেফতারে কর্নেল তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরোয়ার বিন কাসেমসহ র্যাব ৬-এর একটি দলের সহযোগিতায় অভিযান চালানো হয়। ঢাকায় আনার আগে ব্রিফিংয়ে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পালিয়ে থাকার সময় তিনি ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করেন। বোরখা পরে নৌকায় ওঠার আগ মুহূর্তে ধরা পড়েন।
বোরখা পরা অবস্থায় সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাব। পালিয়ে থাকতে চুলের কালো রং করে এবং গোঁফ কেটে তিনি চেহারা বদলের চেষ্টা করেন। ভারতে পালিয়ে গিয়ে সাহেদ আত্মগোপন করতে মাথা ন্যাড়া করার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ভোরে আমরা যখন ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়েছি তখন দেখলাম বেইলি ব্রিজের ওপারে র্যাবের তিনটি গাড়ি এসে থামলো। এরপর র্যাব সদস্যরা চিৎকার করে বলতে থাকেন এই পেয়েছি। ধর ধর। এ সময় আমরা সবাই এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম তারা সাহেদকে ধরে ফেলেছেন। পরে তারা তাকে ব্রিজ পার করে এপারে নিয়ে আসেন। এপারে নদীতে একটি নৌকা আছে। সাহেদ তার স্বীকারোক্তিতে র্যাবকে বলেছে এই নৌকাতে করেই নদী পাড়ি দিয়ে তার ভারতে চলে যাওয়ার কথা ছিল।
ব্রিজের পাশে একটি ছোট ড্রেন দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, ওইখানে একটি নর্দমার মতো রয়েছে। সেই ড্রেনের ভেতরে বোরকা পরে শুয়ে ছিলেন সাহেদ। ওই অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার পরনে শার্ট, প্যান্ট ও বোরকা ছিল। আর তার কোমরে ছিল একটি পিস্তল।
সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায় মাছের ঘেরে লুকিয়ে ছিলেন সাহেদ। ভোর পাঁচটার দিকে দেবহাটা থানার লবঙ্গপতি গ্রাম থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার সকাল ৯টায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমাবন্দরে এসেছে পৌঁছায়। সেখানে থেকে র্যাব সদর দফতরে তাকে নেয়া হয়। র্যাব জানায়, করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্টের মামলাসহ ৫৯টি মামলা রয়েছে সাহেদের বিরুদ্ধে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে র্যাবের গাড়িবহরটি সদর দপ্তরে পৌঁছায়।
র্যাবের এডিজি জানায়, শাহেদ তার ব্যক্তিগত মোবাইলটি ফেলে দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে শাহেদ বার বার অবস্থান পরিবর্তন করায় তাকে ধরতে সময় লেগেছে র্যাবের। সবশেষ আজ ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে নৌকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় অবৈধ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।