টাকা ও স্বর্ণের হিসেব না পেয়ে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারল স্বামী-সন্তানরা

বিদেশ থেকে পাঠানো স্বামীর টাকার জের ধরে প্রাণ গেল এক গৃহবধূর। কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় ৫ লাখ টাকা ও ১১ ভরি স্বর্ণের হিসাব দিতে না পারায় প্রবাসী স্বামী, মেয়ে ও মেয়ের জামাতা মিলে ছেনোয়ারা (৫০) নামে এক নারীকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কান্দাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধা ছেনোয়ারা ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল খালেকের স্ত্রী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহতের স্বামী আব্দুল খালেক গত দুই মাস আগে দেশে আসেন। এরপর বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ও স্বর্ণের হিসাব চায়। তখন স্ত্রী ছেনোয়ারা তার স্বামীর প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার মেয়ে রেহেনা ও তার স্বামী জসিমের নিকট ৫ লাখ টাকা এবং ১১ ভরি স্বর্ণ জমা রেখেছেন তিনি।

এভাবে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর শনিবার নিহতের স্বামী আব্দুল খালেক টাকা ও স্বর্ণ আনতে তার মেয়ের বাড়ি যান। তখন মেয়ে রেহেনা তার বাবাকে জানায়, মা ছেনোয়ারা তাদের কাছে কোনো টাকা এবং স্বর্ণ জমা দেয়নি। বরং তার মায়ের চলাফেরা ভালো না এ কথা জানালে নিহতের স্বামী খালেক এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে চলে আসেন।

স্থানীয়রা আরও জানায়, নিহতের স্বামী আব্দুল খালেক বাড়িতে এসে স্ত্রী ছেনোয়ারাকে টাকা ও স্বর্ণের জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে টাকা ও স্বর্ণের জন্য তার স্ত্রী ছেনোয়ারাকে হাত-পা বেঁধে ভয়ও দেখান তিনি। এ সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়।

এরপর গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে স্বামী খালেক, মেয়ে রেহেনা ও জামাতা জসিমের উপস্থিতে ছেনোয়ারা অগ্নিদগ্ধ হয়। অগ্নিদগ্ধের এই ছবি ভিডিও কল দিয়ে কুয়েত প্রবাসী ছোট ভাইকেও দেখায় মেয়ে রেহানা।

অগ্নিদগ্ধ ছেনোয়ারা ৫ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্নইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। লাশ বাড়িতে এনেছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে লাশ থানায় নিয়ে এসেছি এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ