সন্তানের ভয়ে অন্যের ঝুপড়িতে আশ্রয় নেওয়া এক বাবার গল্প

ঝুপড়ি ঘরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী
ঝুপড়ি ঘরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী  © সংগৃহীত

‘ছেলে আমাকে খেতে দেয় না, কিছু বললেই শুধু মারে। প্রায় আমাকে ধরে ধরে মারে। এক সপ্তাহ আগেও আমার বড় ছেলে রফিক আমার বাম চোয়ালে জোরে চড় মারে’ এভাবেই কথাগুলো বলছেন সন্তানের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে পরের ঝুপড়িতে আশ্রয় নেওয়া এক বাবা।

নিষ্ঠুর সন্তান বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ পরের জমিতে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। খাওয়াও চলছে প্রতিবেশীর বাড়িতে। এভাবে এক সপ্তাহ যাবত মানবেতর জীবন চলছে তার। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ৫নং শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের বড়শিমলা গ্রামে। বৃদ্ধের নাম আবজাল গাজী।

তবে বৃদ্ধ বাবার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছেলে রফিক গাজী। তিনি বলেছেন, ‘আমার বাবা আমার কথা শোনে না। সে তার মত করে চলতে চায়’।

এদিকে বাড়ি ছাড়ার এক সপ্তাহ পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী অন্যের সহযোগিতায় কালীগঞ্জ থানায় ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃদ্ধের স্ত্রীও বাড়ি ছেড়ে একমাত্র মেয়ে জামাই বাড়ি বসবাস করে আসছেন।

জানা গেছে, বৃদ্ধ আবজাল গাজীর তিন ছেলে এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় বেশ কয়েক বছর আগে। তিন ছেলে বিদেশ করেছেন। এর মধ্যে মেজ ছেলে রবিউল ইসলাম গাজী মারা গেছেন। ছোট ছেলে বাবুল গাজী এখনো প্রবাসী। বড় ছেলে রফিক গাজী প্রায় আট বছর হলো প্রবাস থেকে ফিরে এখন বাড়িতে।

আবজাল গাজী বলেন, সন্তানের অত্যাচারে আমি অসহ্য। এরপর বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের পরামর্শে বাড়ি ছেড়ে গ্রাম সম্পর্কে এক বোনের জমিতে একটি চালা তৈরি করে সেখানেই থাকছি।

তবে অভিযুক্ত ছেলে রফিক গাজীর জানান, বাবা আমার কথা না শোনার কারণে আমাদের মধ্যে মতের অমিল হওয়ায় সম্প্রতি তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ